Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

বালিয়াকান্দিতে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ের থেকে রক্ষা পেল ২জন ছাত্রী

॥তনু সিকদার সবুজ॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজার হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ের থেকে রক্ষা পেয়েছে ২জন স্কুলছাত্রী।
তিনি ওই ২ ছাত্রীর পরিবারের নিকট থেকে ‘সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেয়ার’ মুচলেকা নেয়াসহ তাদের মধ্যকার দরিদ্র একজনের লেখাপড়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেছেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী এস.এম আসলাম জানান, গতকাল ২৩শে নভেম্বর দুপুরে নারুয়া ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে ও স্থানীয় মুন্সি ইয়ার উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী মিতু খাতুনের(১৬) বাল্য বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা সেখানে উপস্থিত হয়ে বিয়ের প্রস্তুতি বন্ধ করে দেন। ওই সময় তার উপস্থিতি টের পেয়ে কনের পিতাসহ অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। পরে তিনি কনেসহ তার ২জন অভিভাবক মামা ও খালুকে নিজ কার্যালয়ে নিয়ে আসেন এবং তাদেরকে বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝানোসহ পরিণত বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটির বিয়ে না দেয়ার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন।
অপরদিকে তার আগের দিন ২২শে নভেম্বর বিকালে ইসলামপুর ইউনিয়নের ঠাকুর নওপাড়া গ্রামের দরিদ্র চা দোকানী সজির উদ্দিনের মেয়ে ও মাঝবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীর সাথে কালুখালী উপজেলার আমিন শেখের ছেলে লাভলু শেখের বিয়ের আয়োজন চলার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেন। এ সময় তার উপস্থিতি টের পেয়ে বর পালিয়ে যায়। পরে তিনি বিয়ে বাড়ী থেকে কনের পিতাকে আটক করে তার কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। কনের পিতা হতদরিদ্র হওয়ায় মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে আইন প্রয়োগ না করে উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার শর্তে মুচলেকা নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেন। এছাড়াও তিনি ঐ স্কুল ছাত্রীর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য খরচ বাবদ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে নগদ ৬ হাজার প্রদান করেন এবং এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত তাকে বিনা বেতনে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এই ২টি পদক্ষেপকে স্থানীয়রা সাধুবাদ জানিয়েছেন।