Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী বাজার থেকে আটক ভুয়া এএসআইকে পুলিশে সোপর্দ

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী বাজারের ডিউক এন্টারপ্রাইজ নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে গতকাল ২২শে নভেম্বর সকালে সাখাওয়াত হোসেন সোহান(২৩) নামের ভুয়া এক এএসআইকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। সে রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার নূর হোসেনের ছেলে।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাংগনিক সম্পাদক ও ডিউক এন্টারপ্রাইজের মালিক রইচ উদ্দিন ডিউক জানান, বেশ কিছু দিন ধরে মোবাইলে ম্যাসেজের মাধ্যমে নিজের নাম-ঠিকানা গোপন রেখে এক ব্যক্তি তার কাছে ২লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল। এ টাকা না দিলে তাকে হত্যার হুমকীও দেয়া হয়। ঘটনাটি পূর্বপরিচিত পুলিশের এএসআই পরিচয় দানকারী সাখাওয়াত হোসেন সোহানের সাথে শেয়ার করে তার সহযোগিতা চান। সোহান বিষয়টি দেখবে বলে জানায়। এর ২দিন পর সোহান প্রকাশ করে, বিষয়টি সে কন্ট্রোল রুমে জানিয়েছে। রাজবাড়ী থানার একজন এএসআইয়ের উপর বিষয়টি তদন্ত করার দায়িত্ব পড়েছে। তাকে ১০হাজার টাকা দিতে হবে। ডিউক এতে রাজী না হলেও শেষ পর্যন্ত ২হাজার টাকা দেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় সোহান তার দোকানে এসে জানায়, আপনার ম্যানেজারের মোটর সাইকেলের হেলমেটটিতে হেরোইন আছে। আমাদের চারপাশে সিভিল পুলিশ রয়েছে। ডিউককে হেলমেটটি এনে আড়ালে গিয়ে খুলে চেক করার কথা বলে সোহান। তার কথা মতো হেলমেটটি তিনি একটু আড়ালে নিয়ে দেখেন তার মধ্যে সত্যিই হেরোইন রয়েছে। এ সময় সোহান জানায়, হেলমেটটি তল্লাশী করলে পুলিশ তার ম্যানেজারকে গ্রেফতার করতো। এ ঘটনায় ডিউকের সন্দেহ হলে তিনি সোহানকে না জানিয়ে দোকানের সামনে থাকা সিসি ক্যামেরা চেক করে দেখেন, ওই দিন সকালে সোহান ওই হেলমেটটি নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। এতে তার সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন সোহান ভুয়া এএসআই।
গতকাল বুধবার সকালে সোহান তার দোকানের সামনে এলে তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে আটক করেন। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে সোহানকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে ডিউক থানায় মামলা করবেন বলে জানান।
স্থানীয়রা জানান, সোহানের বাড়ীর পাশেই রয়েছে রাজবাড়ী সদর পুলিশ ফাঁড়ি। সে কারণে ওই ফাঁড়ির কয়েকজন পুলিশের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। মাঝে-মধ্যে সোহানকে ওই ফাঁড়ির পুলিশের সাথে বিভিন্ন স্থানে মোটর সাইকেল চালকদের কাগজপত্র চেকিং করতে দেখা যেত এবং যেসব মোটর সাইকেলের কাগজপত্র নেই তাদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে মোটর সাইকেলগুলো ছেড়ে দিত। সোহান নিজেই বিভিন্ন মোটর সাইকেল সংকেত দিয়ে থামাতো এবং পুলিশ চেকিং করতো। এছাড়াও সে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজও করতো।
রাজবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ তারিক কামাল জানান, অভিযুক্ত সোহান পুলিশে চাকুরী করে না। তারপরও তার কাছ থেকে নিজ নামীয় পুলিশের ভিজিটিং কার্ড পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সে পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা ও হয়রানী করতো। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।