॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউপির কাচারীপাড়া গ্রামে গতকাল ২১শে নভেম্বর কবর জিয়ারত, আলোচনা, মিলাদ, দোয়া অনুষ্ঠান ও তবারক বিতরণের মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি, পাংশা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নাদের মুন্সীর ৩য় মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে নিহতের পারিবারিক উদ্যোগে ও হাবাসপুর ইউপির ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার কাচারীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
জানাযায়, হাবাসপুর ইউপির ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ গোলাম রব্বানী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মরহুম নাদের মুন্সীর পুত্র, পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা মাহমুদ হেনা মুন্সী, হাবাসপুর ইউপি আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রহমত আলী খান, হাবাসপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও হাবাসপুর ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল আলিম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে কসবামাজাইল ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দার, হাবাসপুর ইউপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নূর-নবী মুন্সী, হাবাসপুর ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজা, ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, হাবাসপুর ইউপি ছাত্র লীগের সভাপতি সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেকসহ মরহুমের আত্মীয়-স্বজন, গ্রামবাসী লোকজন এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২১শে নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে মোটর সাইকেলযোগে নিজ বাড়ী থেকে পাংশা শহরের যাওয়ার পথে বাড়ীর অদূরে কাচারীপাড়া বাজারের পাশে সড়কে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাকে গুলি করে। পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে পাংশা হাসপাতালে এবং পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার দিন রাতেই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সন্ত্রাসীদের গুলিতে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা নাদের মুন্সীর নিহত হওয়ার ঘটনায় সর্বস্তরের মানুষের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিকে, নাদের মুন্সী হত্যা মামলাটি (পাংশা থানা মামলা নং-১৭, তাং-২৩/১১/২০১৪, ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড) বর্তমানে পিবিআইতে তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার কয়েক দিনের মধ্যেই পাংশা থানার পুলিশ মামলার ১০জন এজাহারনামীয় আসাীর মধ্যে সেলিম, আনিস ও ফারুক এবং সন্দিগ্ধ আসামী লিটন, আনছার ও জটাকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। কয়েক মাস আগে মামলার এজাহারনামীয় অপর আসামী ফখরুল খানকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সকল আসামী বর্তমানে বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। মামলার ১নং আসামী কাচারীপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমান মিয়ার ছেলে মনজুকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার এবং ব্যবহৃত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রটিও থানা পুলিশ উদ্ধার করতে পারে নাই। এ নিয়ে নিহতের পরিবারসহ বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে।