Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দৌলতদিয়ার নিষিদ্ধ পল্লী বন্ধ না হওয়ায় পর্যন্ত সেফ দ্যা চিলড্রেন পরিচালিত কার্যক্রম চলমান রাখতে ডিসি’র আহবান

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষার বিষয়ে সেফ দ্যা চিলড্রেন বাংলাদেশের আয়োজনে এনজিও কেকেএস ও মুক্তি মহিলা সমিতির সহযোগিতায় গতকাল ৭ই নভেম্বর বেলা ১১টায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাজবাড়ী জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী। এনজিও কেকেএস’র নির্বাহী পরিচালক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক কাজী ফারুক আহম্মেদ, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, সেভ দ্যা চিলড্রেন কোরিয়ার প্রতিনিধি সাম ইয়াং চং ও যাই চং, এনজিও কেকেএস’র প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর এটিএম রফিক উদ্দিন, সেভা দ্যা চিলড্রেন বাংলাদেশের প্রকল্প কর্মকর্তা স্মরণিকা গুন, এনজিও মুক্তি মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা বেগম প্রমুখ।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ আলীমুর রেজা এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মির্জা আবুল কালাম আজাদসহ সেভ দ্যা চিলড্রেন, কেকেএস ও মুক্তি মহিলা সমিতির কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এনজিও কেকেএস ও মুক্তি মহিলা সমিতি যে নিষিদ্ধ পল্লীর শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে সেই এলাকার সাধারণ মানুষ খুবই গরীব। প্রতি বছরই তাদেরকে বন্যা ও নদী ভাঙ্গনের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়। আবার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হওয়ায় সেখানে অনেক আগে থেকেই একটি বৃহৎ নিষিদ্ধ পল্লী গড়ে উঠেছে। ঘাট দিয়ে পারাপারের সময় বিভিন্ন যানবাহন সংশ্লিষ্টরা রাতে সেই নিষিদ্ধ পল্লীতে প্রবেশ করে ও যৌন কর্মীর সাথে তাদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। সেখানে চার বছর বয়সী আটশ শিশু প্রতিনিয়ত মায়ের সাথে থাকে। আর এই সব শিশুর সুরক্ষার জন্য কেকেএস ও মুক্তি মহিলা সমিতি তাদের সেফ হোমের মাধ্যমে সেখানকার নারী ও শিশুদের সুরক্ষা প্রদান করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। যা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। বর্তমান সরকার তার বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে এই নিষিদ্ধ পল্লীর নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষার জন্য কাজ করছে। জেলা পুলিশ সেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নির্যাতিত নারীদের রক্ষায় কাজ করছে। সবদিক দিয়ে বিচার করলে মূলতঃ সেখানকার নারী ও শিশুরা খুবই নির্যাতিত। সরকার এই নির্যাতিত নারী ও শিশুদের রক্ষায় কাজ করছে, যাতে এই নিষিদ্ধ পল্লীটি বন্ধ করে দিয়ে সেখানকার নারী ও শিশুদের অন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত, বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। যদিও আমাদের সম্পদ সীমিত, তারপরও আমাদের এই সীমিত সম্পদের ব্যবহারের মাধ্যমে এই সকল অবহেলিত নারীদের উন্নয়নের লক্ষ্যে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে নিষিদ্ধ পল্লীটি বন্ধ করে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি যতদিন এই নিষিদ্ধ পল্লীটি বন্ধ না হয় ততদিন সেখানকার নারী ও শিশুদের কল্যাণে এনজিও কেকেএস ও মুক্তি মহিলা সমিতির সাথে সেফ দ্যা চিলড্রেনের পরিচালিত কার্যক্রম চলমান রাখার আহবান জানান।