॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে ‘যুবদের জাগরণ, বাংলাদেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে গতকাল ১লা নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা, যুব কল্যাণ তহবিল হতে অনুদানের চেক ও প্রশিক্ষিত যুবদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ, বৃক্ষরোপন কর্মসূচী ও প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী। সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গৌতম চন্দ্র দে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবু, নিরাময় নারী বান্ধব সমিতির নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন, স্বস্তি মহিলা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নাছিমা আক্তার, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সফল উদ্যোক্তা সুধীর কুমার বিশ্বাস, হাফিজ উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আতাহার আলী।
এ সময় বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষকগণ, অনুদান-ঋণের চেক নিতে আসা উদ্যোক্তাগণ ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে আগের তুলনায় শিক্ষিত যুবদের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই শিক্ষিত যুবদের সকলকে সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। যে সব যুবরা চাকুরী না পেয়ে বেকার রয়েছে তাদের উচিত হবে বেকার না থেকে যুব উন্নয়নের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা। যাতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা যায়।
সম্মানিত বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী বলেন, দেশের বর্তমান উন্নয়নের অগ্রযাত্রার প্রেক্ষাপটে যুবরা আজকে আমাদের জন্য আভিশাপ নয়, বরং তারা আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য আশীর্বাদ। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুবদের কর্মক্ষম করে তোলার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তার ফলে দেশের যুবদের কেউ আর বেকার থাকবে না। তিনি নারী জাগরণের উদ্যোগ গ্রহণেও সফল হয়েছেন। এসব কারণে সেদিন আর বেশী দূরে নয়, যেদিন আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের যুব সমাজের এক তৃতীয়াংশের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। রাজবাড়ীর অর্থনীতির ১নম্বর হচ্ছে কৃষি, ২নম্বর ডেইরী, ৩নম্বর মৎস্য। এই ৩টি সেক্টরকে প্রধান করে আমরা অগ্রসর হবো। যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাগুলো কাজে লাগালে যুব সমাজ অনেক এগিয়ে যেতে পারবে।
আলোচনা সভার শেষে যুব কল্যাণ তহবিল থেকে রাজবাড়ীর ১টি যুব সংগঠনকে ২৫হাজার ও ৫টি যুব সংগঠনকে ২০হাজার টাকা করে অনুদানের এবং ৩ জনকে ৫০ হাজার টাকা করে যুব ঋণের চেক প্রদান করা হয়।
অনুদানপ্রাপ্ত যুব সংগঠনগুলো হলো ঃ রাজবাড়ী শহরের বেড়াডাঙ্গার মৃন্ময়ী মহিলা উন্নয়ন সংস্থা, ভবাণীপুরের ন্যাচার সার্ভিস এসোসিয়েশন (নাসা), হোসনাবাদের মীম নারী বান্ধব মহিলা সংগঠন, বালিয়াকান্দির এ্যাসেড(এ্যাসোসিয়েশন ফর সোসিও ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট) কালুখালীর রতনদিয়ার শান্তি কল্যাণ সংস্থা ও পাংশার মাগুড়াডাংগীর সম্প্রীতি মহিলা উন্নয়ন সংস্থা এবং যুব ঋণপ্রাপ্তরা হলো-রাজবাড়ী সদর উপজেলার বড় রঘুনাথপুর গ্রামের ছিমান বেপারীর মেয়ে সিমা আক্তার, চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের মনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী তানজিলা আক্তার এবং উদয়পুর গ্রামের আকবর হোসেনের ছেলে ফিরোজ হোসেন সুমন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রশিক্ষিত যুবদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ এবং বৃক্ষরোপন কর্মসূচী ও প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করা হয়।