Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

পাংশা থানার ওসি মিজানুর রহমান হত্যা মামলা পুনঃ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন —রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম

॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা গতকাল ২৪শে অক্টোবর দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম।
তিনি বলেন, বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও চাঁদাবাজীর কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ২০০৪ সালে তৎকালীন পাংশা থানার ওসি মিজানুর রহমান সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। তিনি ভালো অফিসার ছিলেন। তার হত্যার পরিকল্পনাকারীরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। ওই মামলার পুনঃতদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি। এমপি জিল্লুল হাকিম বলেন, কিছুদিন আগে ওই মামলার প্রধান আসামী কসবামাজাইলের সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান কামাল পুলিশের সাথে ক্রসফায়ারে নিহত হয়। আরো কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। সন্ত্রাস দমনে পুলিশের সময়োপযোগি পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে পাংশায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মানুষ এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারছে। মানুষ যাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারে তার জন্য কাজ করতে হবে।
এমপি জিল্লুল হাকিম মৌরাট ইউপি ও পাট্টার পূঁইজোর গ্রামে পৃথক দুটি ধর্ষণ ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, পাংশায় সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রতিকারে ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। ধর্ষণকারীদের গ্রেফতারে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করে তিনি বলেন, ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে এলাকায় ধর্ষণ প্রবণতা কমে যাবে।
মাদক প্রতিরোধে থানা পুলিশকে ইউপি চেয়ারম্যানদের সহযোগিতা করার আহবান জানিয়ে এমপি জিল্লুল হাকিম বলেন, মাদক সামাজিক ব্যাধি। সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে মাদক দূর করতে হবে। যারা মাদক সেবন করে তারা শুধু নিজেকে ধ্বংস করে তা-নয়, মাদকের কারণে গোটা সমাজ নষ্ট হয়। যুবসমাজ ধ্বংস হয়। মাদকের কারণে সমাজে অপরাধ প্রবণা বৃদ্ধি পায়। তাই যে কোনো মূল্যে সমাজ থেকে মাদক প্রতিরোধে ইউপি চেয়ারম্যানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
এমপি জিল্লুল হাকিম নদী কেন্দ্রীক অপরাধ প্রবণতা রোধে নৌ-পুলিশ ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। নির্বাচনকে কলুষিত করতে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল অস্ত্র কেনার পাঁয়তারা করছে। এলাকায় অবৈধ অস্ত্রের মজুদ যেন কেউ গড়ে তুলতে না পারে সে ব্যাপারে থানা পুলিশের ব্যবস্থাগ্রহণের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদ হাসান ওদুদ, এসিল্যান্ড শেখ রাশেদউজ্জামান, অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা মাহমুদ হেনা মুন্সী, বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর শাকিল, হাবাসপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল আলিম, যশাই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, মৌরাট ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান, শরিষা ইউপি চেয়ারম্যান আজমল আল বাহার বিশ্বাস, বাবুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ইমান আলী সরদার, কলিমহর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল জলিল, কসবামাজাইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান খান, মাছপাড়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আকবর আলী ও পাংশা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ মোক্তার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদা আহম্মেদ, বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী অধ্যাপক মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাবসহ আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।