Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

বালিয়াকান্দিতে মিষ্টি কুমড়া চাষে সাফল্য॥যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ চলতি বছর রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় প্রায় ৫শত হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক চাহিদা থাকায় দিন দিন এ অঞ্চলে মিষ্টি কুমড়ার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষকরা জানায়, মরিচ চাষের সাথে কুমড়া চাষ করা যায় বলে এর উৎপাদন খরচ কম। একর প্রতি ৯হাজার টাকা করে খরচ হয়। যেখানে প্রায় ১২০০টি কুমড়া উৎপাদন হয়ে থাকে। যার থেকে আয় হয় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। বাইরের জেলা থেকে ব্যাপারীরা এসে কুমড়া কিনে নিয়ে যায় বলে বিক্রিতেও ঝামেলা কম। তাছাড়া ঢাকা-খুলনা-চট্টগ্রামে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কুমড়ার দামও বেশ ভাল পাওয়া যায়। তাদের অভিযোগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ভালভাবে দেখভাল করলে উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পেত।
আব্দুর রাজ্জাক নামের এক কৃষক বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভবান হওয়ার কারণে কুমড়া চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতার কথা অস্বীকার করেন।
মোঃ ফরিদ খান নামের আরেকজন কৃষক বলেন, কুমড়া চাষে সাধারণত কোন খরচ নেই। খরচ যেটা হয় সেটা মরিচে। তিনিও কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমরা আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই চাষাবাদ করছি।
বহরপুর ইউনিয়নের কুমড়া চাষী মোঃ হালিম শেখ বলেন, এবার অতি বৃষ্টির কারণে ফলন কম হলেও শেষ মুহুর্তে লাভের মুখ দেখেছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। মোঃ হাসেম শেখ বলেন, এ বছর ফলন কম হওয়ার কারণে জামালপুর বাজার থেকে প্রতিদিন ৫ ট্রাক করে কুমড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় গেছে, যেখানে গত বছর গিয়েছিল ১০ ট্রাক করে।
কুমড়া চাষী মোস্তফা বলেন, ক্ষেত থেকে কুমড়া তুলে পাকা রাস্তা পর্যন্ত নিয়ে আসতে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ কম হয়। তিনি কৃষকদের স্বার্থে ২কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার উপর গুরুত্ব দেন।
জামালপুর বাজারের আড়তদার বিপ্লব দত্ত জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম-মাগুরা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ অঞ্চলের কুমড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিন ৫-৬ ট্রাক কুমড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন কৃষি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা সব সময় মাঠে থাকেন। তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বালিয়াকান্দি এলাকা উঁচু হবার কারণে এ অঞ্চলে বন্যা বা বৃষ্টির পানি কম জমে। খরিপ-১ এবং খরিপ-২ অঞ্চলে প্রায় ৫শত হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ হয়। চাহিদা বেশী থাকায় এর উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কুমড়া চাষে সাধারণত রোগ-বালাই কম হয়। তিনি কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য চাষীদের পরামর্শ দেন।