Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীর বসন্তপুরে মরিচ ক্ষেত থেকে কলা ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার

॥দেবাশীষ বিশ্বাস/রেজাউল করিম॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের একটি মরিচ ক্ষেত থেকে গতকাল ১৯শে অক্টোবর সকালে কলা ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান শেখ(৩৮) এর গলাকাটা লাশ উদ্ধার পুলিশ করেছে। সে লক্ষ্মীপুর গ্রামের জয়নাল শেখের ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেছে।
নিহতের স্ত্রী রুবি বেগম ওরফে সোহাগী জানায়, গত ১৮ই অক্টোবর রাত ৮টার দিকে তার স্বামী জিল্লু ভাত খাওয়ার পর মোবাইলে একটি ফোন আসে। ওই সময় মোবাইলের অপর প্রান্ত থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে উচ্চ স্বরে কথাবার্তা বলতে শোনা যায়। এর কিছুক্ষণ পর সে স্থানীয় শাহজাহানের দোকানে চা পান করতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়। তারপর সে আর ফিরে আসেনি। রাতে তার মোবাইলে অনেকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু মোবাইলে ফোন ঢুকলেও তা রিসিভ করা হয়নি। সকালে প্রতিবেশী মিরাজ সকালে তার সবজি ক্ষেত দেখতে গিয়ে স্থানীয় আলীর মরিচ ক্ষেতে তার মৃতদেহ দেখতে পেয়ে তাদেরকে খবর দেয়।
নিহত জিল্লুর পিতা জয়নাল শেখ বলেন, তার ছেলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সুদে টাকা ধার নিয়ে ব্যবসা করতো। ধারণা করা হচ্ছে, সুদের টাকা নিয়ে কারো সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।
খবর পেয়ে রাজবাড়ীর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার(সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার,ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তারিক কামাল, পরিদর্শক(তদন্ত) মোঃ কামাল হোসেন ভুঁইয়া, খানখানাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম ভুঁইয়া এবং বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর্জা বদিউজ্জামান বাবু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ আছাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মাঝে রাজবাড়ী ডিবি পুলিশের একটি দল এবং সদর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তারিক কামাল বলেন, ধারণা করা হচ্ছে জিল্লুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে প্রথমে সে প্রতিরোধ করতে যায়। এতে তার হাতে বড় ধরনের আঘাত লাগে। এরপর মাথা ও ঘাড় সোজা ধারালো অস্ত্রের আরেকটি আঘাতে তার মাথা দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, কলার ব্যবসা, টাকা-পয়সা নিয়ে ঝামেলা কিংবা দাম্পত্য কলহের জেরে জিল্লু খুন হয়ে থাকতে পারে। নিহত জিল্লুর ৪টি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রথম সন্তান জুলেখা ৭ম শ্রেণীর এবং দ্বিতীয় সন্তান রুমি ২য় শ্রেণীর ছাত্রী। পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের পিতা জয়নাল শেখ, স্ত্রী রুবি বেগম ওরফে সোহাগী এবং হিরু নামের এক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে গেছে।