Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ীতে র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উপলক্ষে ‘তথ্যের অধিকার, তথ্যই শক্তি; সুশাসনের হাতিয়ার, দুর্নীতি থেকে মুক্তি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক)’র সহযোগিতায় গতকাল ২৮শে সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে র‌্যালী পরবর্তী আলেচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক)’র সভাপতি প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা, জেলা এনজিও ফাউন্ডেশনের সভাপতি লুৎফর রহমান লাবু ও ডিবিসি টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ বিশ্বাস প্রমুখ।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদেকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, শত বছরের রীতি অনুযায়ী কিছুদিন আগেও আমাদের দেশের সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কোন তথ্য জানার অধিকার দেশের সাধারণ জনগণের ছিল না। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর অনুধাবন করতে পারলেন দেশকে এগিয়ে নিতে এবং সার্বিক উন্নয়নকে বেগবান ও টেকসই করতে দেশের প্রতিটি নাগরিকের তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করা দরকার। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি দেশের যে কোন উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তর জন্য হুমকী নয় এমন তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শত বছরের রীতি-নীতি ভেঙ্গে ২০০৯ সাথে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করেন। যার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিকের যে কোন সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের বা উন্নয়নমূলক কাজের তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। ২০০৯ সালে যখন তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা হয় তখন অনেকেই মনে করেছিলেন এতে হয়তো দেশের অনেক ক্ষতি হলো। কিন্ত বাস্তবে হয়েছে তার উল্টোটি। কারণ এর ফলে একটি এলাকায় যে উন্নয়ন কর্মকান্ড হচ্ছে সে সম্পর্কে উক্ত এলাকার জনগণ উন্নয়ন কাজের বাজেট ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে পারছেন। ফলে উন্নয়ন কাজে সংশ্লিষ্টদের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা সৃষ্টি হয়েছে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ করা অনেকাংশে সম্ভব হয়েছে। যার কারণে বর্তমানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করার পথ সুগম হয়েছে। তার সুফল হিসেবে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় থাইল্যান্ড, মায়ানমারসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নাম থাকলেও বাংলাদেশের নাম সেখানে নাই।
তিনি আরো বলেন, আমার সকলেই আগে জানতাম ‘নলেজ ইজ পাওয়ার’ কিন্তু তথ্য প্রবাহ যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এখন প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে ‘ইনফরমেশন ইজ পাওয়ার’ সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে পরিণত হয়েছে। সেই তথ্য প্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী দেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত মিলেনিয়াম ডেভলপমেন্ট গোল(এমডিজি) বাস্তবায়ন করে বর্তমানে সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল (এসডিজি’র ১৭টি গোল বাস্তবায়নের পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। এসডিজির এই ১৭টি গোলের মধ্যে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের বুকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি উন্নত দুর্নীতি বিহীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সরকারী-বেসরকারী দপ্তরসহ সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
আলোচনা সভার পূর্বে দিবসটি উপলক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খানের নেতৃত্বে একটি র‌্যালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।