Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

পরিদর্শনকালে অসন্তোষ প্রকাশ॥কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসীনতায় রাজবাড়ী সরকারী হাঁস-মুরগীর খামারের বেহাল দশা — সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার

॥কবির হোসেন॥ মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১নং সাব-কমিটির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার (ঢাকা-১৫) গতকাল ২৬শে সেপ্টেম্বর দুপুর ১টায় রাজবাড়ী সরকারী হাঁস-মুরগীর খামার পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালীন সময়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বারসহ সাব-কমিটির আহ্বায়ককের সফরসঙ্গী হিসেবে কমিটির সচিব জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উপ-সচিব(এজিএনআরসি) মোঃ মফিজুল ইসলাম, কমিটি শাখা-১৩ এর সহকারী সচিব মোঃ আব্দুল হামিদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আবু বক্কর সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার শাহ্ মোঃ সজীব, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাজিনুর রহমান, সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সরকার আশরাফুল ইসলাম এবং খামারের উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ শাহাদত হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন কালীন সময়ে রাজবাড়ী সরকারী হাঁস-মুরগীর খামারের সার্বিক অবস্থা দেখার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, খামারটি অনেক দিনের একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এখানে হাঁস-মুরগী পালনের জন্য চারটি ভবনসহ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্টাফদের কর্মকান্ড পরিচালনার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে খামার পরিচালনা ও এর সার্বিক উন্নয়ন সাধনের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে হাঁস-মুরগী পালনের জন্য এর চারটি বিল্ডিংয়ের মধ্যে তিনটি বিল্ডিং জরাজীর্ণ অবস্থায় হাঁস-মুরগী পালনের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। বহু বছর ভবনগুলোর কোন সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি, যা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদাসীনতা বলেই মনে হয়। বর্তমানে একটি বিল্ডিংয়ে কিছু দেশীয় সোনালী জাতের মুরগী ছাড়া আর কোন উন্নত জাতের হাঁস ও মুরগী নেই। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ সরকারী খামারের পর্যাপ্ত জায়গা ব্যবহার করে দেশী-বিদেশী উন্নত জাতের হাঁস-মুরগী উৎপাদন করে খামারীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই অঞ্চলকে হাঁস-মুরগী উৎপাদনে সমৃদ্ধ করতে পারতেন কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে সেটি করতে পারছেন না। তারা এখানে শুধু খাওয়ার উপযোগী মুরগী উৎপাদন করছেন এবং স্থানীয়ভাবে বিক্রির জন্য দু’চারজনকে এটি সরবরাহ করছেন। এছাড়াও কর্মকর্তাদের প্রদত্ত তথ্য মতে, বর্তমানে রাজবাড়ী সরকারী হাঁস-মুরগী খামারে ১৪জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ৬জন কর্মকর্তা-কমচারী অন্যত্র ডেপুটেশনে কর্মরত রয়েছেন। অথচ এখানে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মরত থাকলে এই অঞ্চলের হাঁস-মুরগীর খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় মুরগীর বাচ্চা উৎপাদন করে তাদের খামারে সরবরাহ করা যেত। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডেপুটেশনে অন্যত্র কর্মরত থাকা এবং উদাসীনতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। যা আমার দৃষ্টিতে যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও কর্মকর্তাদের ব্যর্থতাই এর প্রধান কারণ।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশকে মাংস-ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যারই অংশ হিসেবে আজকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সাব কমিটির আহবায়ক হিসেবে হাঁস-মুরগীর খামার পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রীর নিকট রিপোর্ট প্রদান করবো। যার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। যাতে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে এই অঞ্চলে উন্নতজাতের হাঁস-মুরগী উৎপাদন ও খামারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়।
তিনি জেলা প্রশাসকসহ জেলার সকল জনপ্রতিনিধিকে প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী দেশকে যাতে ডিম ও মাংস উৎপাদনে করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করার আহবান জানান।