Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলার ৪০৬টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন॥নির্বিঘœ করতে প্রশাসনের প্রস্তুতি

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৯শে সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান, জাতীয় গোয়েন্দা এনএসআই’র উপ-পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান, রাজবাড়ী পৌরসভার প্যানেল মেয়র নির্মল কৃষ্ণ চক্রবর্তী শেখর, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নুরমহল আশরাফী, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচ.এম রকিব হায়দার, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুর রহমান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার বাগচী, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন কুমার দাস, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব কর্মকার, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি ও বালিয়াকান্দি উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাম চট্টোপাধ্যায়, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গণেশ মিত্র, গোয়ালন্দ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ ও পাংশা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত হালদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, জেলার বিভিন্ন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও তাদের প্রতিনিধিগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, আগামী ২৬শে সেপ্টেম্বর বাঙালী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হবে। জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় ৯৭টি, পাংশা উপজেলায় ৯০টি, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১৪৫টি, কালুখালী উপজেলায় ৫৩টি ও গোয়ালন্দ উপজেলায় ২১টিসহ সর্বমোট ৪০৬টি পূজা মন্ডবে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই উৎসব উপলক্ষে ইতিমধ্যে সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিটি মন্ডপে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও পূজা কমিটির সাথে আলোচনা করে যে সব পূজা মন্ডপের আর্থিক অবস্থা ভাল না তাদের জন্য আরো ২হাজার টাকা করে আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হবে। সকল পূজা মন্ডপে পুলিশ-আনসার মোতায়েনসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, পূজা শুরুর দিন থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিদিন দর্শনার্থীরা বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পূজা দর্শন করতে পারবে। পূজা মন্ডপের আশপাশে কোন মেলা আয়োজন করা যাবে না। বিসর্জনের দিন রাত ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন কাজ সম্পন্ন করতে হবে। রাজবাড়ী জেলা বন্যা কবলিত হওয়ার কারণে পূজা উদযাপন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঈদুল আযহার ন্যায় কোন আলোকসজ্জা করা হবে না। তবে পূজা মন্ডপগুলো চাইলে স্বল্প আলোকসজ্জা করতে পারবে। নামাজের সময় পূজা মন্ডপগুলোতে উচ্চস্বরে মাইক বা সাউন্ড সিস্টেম বাজানো থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। পূজাকালীন সময়ে জেলায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে বলা হয়েছে। তারপরও যদি কোন কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে সেজন্য মন্ডপগুলোকে নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ সেহেতু পূজা উদযাপন কমিটিতে সকল ধর্মের লোক অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে, যাতে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে পূজা উদযাপন করা সম্ভব হয়। এছাড়াও যে কোন পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন পূজা কমিটির সঙ্গে থেকে কাজ করবে বলে তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেন। তিনি পূজা শুরুর দিন থেকে শেষ পর্যন্ত পূজা মন্ডপগুলো পরিদর্শন করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সার্বজনীনভাবে দুর্গোৎসব সফল করার লক্ষ্যে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।