Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

ফরিদপুরের বৃক্ষপ্রেমী সামাদের জীবনাবসান

॥মাহবুব হোসেন পিয়াল॥ না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফরিদপুরের বৃক্ষপ্রেমী আব্দুস সামাম শেখ(৬৮)। গতকাল শনিবার ভোর ৪টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। ফরিদপুরের সাদা মনের এই মানুষটিকে সকলেই ‘পাগলা সামাদ’ হিসেবে ডাকতো।
গত ৫০ বছর ধরে সামাদ ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন জায়গাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে, সড়কের পাশে গাছ রোপন করতেন। থাকতেন শহরতলীর ভাজনডাঙ্গা কলোনীতে সরকারী জায়গায়। দরিদ্র সামাদ রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রিক্সা চালিয়ে প্রতিদিন যে টাকা উপার্জন করতেন তার থেকে আগে কিনতেন এক বা একাধিক গাছ। এরপর যে টাকা অবশিষ্ট থাকতো তাই দিয়ে পরিবারের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে বাড়ী ফিরতেন। এ কারণে এলাকাবাসী তাকে ‘পাগলা সামাদ’ বলেই ডাকতো। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও ২ ছেলে রেখে গেছেন। এক ছেলে কুতুব রিক্সা চালক এবং আরেক ছেলে চপল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উমেদার হিসেবে কাজ করে।
চলতি বছরের ফেব্র“য়ারী মাসে ইংরেজী দৈনিক ডেইলি স্টার তাকে সংবর্ধনা প্রদান করে তাদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে। গাছ প্রেমিক সামাদকে নিয়ে দি ডেইলি স্টার ছাড়াও দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক সমকালসহ ঢাকা ও ফরিদপুরের বিভিন্ন পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এটিএন বাংলা, একুশে টেলিভিশনসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায়ও তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে।
সামাদ লিভারের টিউমার রোগে ভুগছিলেন। গত ১২ই জুলাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার পেটে অস্ত্রোপচার করেন ওই হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক রতন সাহা। পরবর্তীতে সেপটিছেনিয়া(রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়া) সংক্রান্ত সমস্যায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সামাদের মৃত্যুর খবর শুনে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার, আলীয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান প্রমুখ তার বাড়ীতে ছুটে যান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। গতকাল শনিবার বাদ যোহর ভাজনডাঙ্গা কলোনী জামে মসজিদে জানাজার নামাজ শেষে ভাজনডাঙ্গা গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।