Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

মাদক পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস রাজবাড়ীতে উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী

॥রুবাইয়া নাসরিন নিশি॥ মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার ও পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ‘শিশু ও যুবাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়াই তাদের নিরাপদে বেড়ে উঠার প্রথম পদক্ষেপ’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসারের কার্যালয়ের আয়োজনে গতকাল ২৬শে জুলাই সকালে কালেক্টরেট চত্বরে মানববন্ধন ও বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা এবং অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মানোয়ার হোসেন মোল্ল¬া ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজবাড়ী সার্কেলের সহকারী পরিচালক রাজিব মিনা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার পার্থ প্রতিম দাস।
অন্যান্যের মধ্যে রিহ্যাব সেন্টারে চিকিৎসার মাধ্যমে মাদকমুক্ত হওয়া মাহমুদ, রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সাজ্জাদ আরবান স্বাদ, রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ফজিয়া খানম অহনা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, জেলা তথ্য অফিসার মোঃ মুক্তার আলী মলি¬ক, রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আব্দুল হামিদ খান, এনজিও ভিপিকেএ’র নির্বাহী পরিচালক হাফিজ আল আসাদ, এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবুসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, সভাপতি ও বিশেষ অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, মাদক এমন একটি ব্যাধি যা দেশ, সমাজ, পরিবার তথা সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি বড় হুমকি। আমাদের সকলকে এই মাদকের বিরুদ্ধে নিজেদের ঘর থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যাতে একে সমূলে ঘর, সমাজ তথা দেশ থেকে বিতাড়িত করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশের সন্ত্রাসের প্রধান কারণ হচ্ছে মাদক। দেশে যেভাবে ভয়াবহ আকারে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকসেবী বেড়ে যাচ্ছে তাতে শুধু আইন প্রয়োগ করে বন্ধ করা সম্ভব না। সামাজিক আন্দোলন ও গণপ্রতিরোধের মাধ্যমেই কেবল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মাদক ব্যবসায়ী, সেবনকারী সে যেই হোক তাকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া বা তার ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়।
এছাড়াও সভায় মাদকের ভয়াবাহ দিক, এর মাধ্যমে শরীরের কি কি ক্ষতি হয়, কিভাবে একটি ছেলে মাদকাসক্ত হয়, তাকে মাদক থেকে ফেরানোর উপায় প্রভৃতি ছাড়াও প্রতিটি পাড়া, মহল্ল¬া, গ্রাম, ওয়ার্ডসহ সর্বস্তরে মাদক নির্মূলে মাদক বিরোধী কমিটি গঠন করার আহবান এবং মাদকের সাথে জড়িতরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের ব্যাপারে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের তথ্য প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়। আলোচনা সভা শেষে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আলোচনা সভার পূর্বে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আম্রকানন চত্বর থেকে মানববন্ধন ও বর্নাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন অনুষ্থি হয়। শোভাযাত্রটি বৈরী আবহাওয়ার কারণে আম্রকানন চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।