॥স্টাফ রিপোর্টার॥ পবিত্র রমজান উপলক্ষে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ছয়টি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে। কোন ব্যবসায়ী অসাধুপায়ে যেন অতি মুনাফার সুযোগ না নিতে পারে, সে লক্ষ্যে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বেঁধে দেওয়া মূল্য অনুযায়ী পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সরকারের কয়েকটি সংস্থা নিয়মিত বাজার তদারকি করবে।
দাম বেঁধে দেওয়া পণ্যগুলো হলো- ছোলা, পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল, মসুর ডাল, চিনি ও খেজুর।
এ বিষয়ে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ গতকাল সোমবার বলেন, সাধারণত বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে রমজান মাসে কয়েকটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অতি মুনাফার চেষ্টা করে। আসন্ন রমজানে সে ধরনের অপতৎপরতা বন্ধে স্থানীয় ও আন্তজার্তিক বাজার পর্যালোচনা, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং সরকারি-বেসরকারী সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে পণ্যের চাহিদা নিরূপণ করে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এই ছয়টি পণ্যের বার্ষিক চাহিদা ও রমজানের চাহিদার বিপরীতে দেশের উৎপাদন, আমদানির পরিমাণ ও আমদানির মূল্য বিবেচনা করে পাইকারি ও যৌক্তিক খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি এও জানান, দেশে বর্তমানে এই ছয়টি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।
নতুন বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী খুচরা বাজারে ছোলা কেজি প্রতি ৬৩ থেকে ৬৭ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, ভোজ্যতেলের এক লিটারের বোতল ১৩৯ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৬৬০ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ৬৭ থেকে ৬৯ টাকা ও সরু দানার ডাল ৯৭ থেকে ১০৩ টাকায় বিক্রি হবে এবং চিনির খুচরা মূল্য কেজি প্রতি ৬৭ থেকে ৬৮ টাকায় কিনতে পারবেন ক্রেতারা। সাধারণ মানের খেজুর কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও মধ্যম মানের খেজুর ২০০ থেকে ২৫০ টাকার বেশি হতে পারবে না।
মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, তারা কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী এই দাম বেঁধে দিয়েছেন। এটা নিশ্চিত করতে বাণিজ্য, খাদ্য ও কৃষি এই তিন মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে মোট ৩৪টি মনিটারিং টিম ঢাকা শহরে বাজার তদারকি করবে। এছাড়া দেশের অন্যন্যা স্থানেও সরকারের সংস্থাগুলো পণ্য মূল্য মনিটারিংয়ের কাজ করবে।
তিনি জানান, কোন ব্যবসায়ি অসাধুপায়ে বা অন্য কোন অজুহাতে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী রমজান মাসে প্রায় ৮০ হাজার মেট্রিক টন ছোলা, তিন লাখ টন পেঁয়াজ, দুই লাখ টন ভোজ্যতেল, ৮০ হাজার টন মসুর ডাল, এক লাখ ৩৬ হাজার টন চিনি ও ৪০ থেকে ৫০ হাজার টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে।