॥নিউইয়র্ক প্রতিনিধি॥ “অভিবাসীগণের অধিকার, কল্যাণ ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। তাদের বিরুদ্ধে ‘ভীতিউদ্রেকী অপপ্রচার’, ঘৃণা, অসহিষ্ণুতা ও বৈষম্য যেভাবে বেড়ে চলেছে তা মোকাবিলায় বৈশ্বিক সংহতি গড়ে তোলা অপরিহার্য” -গত ১লা ডিসেম্বর ‘নিরাপদ, নিয়মতান্ত্রিক ও নিয়মিত অভিবাসনের বৈশ্বিক কম্প্যাক্ট’ এর উপর জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রথম দ্বি-বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে প্রদত্ত প্যানেল বক্তব্যে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
বৈশ্বিক অভিবাসন কম্প্যাক্ট গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকা ও নিবিড় অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি এর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও সে প্রতিশ্রুতির পূনর্ব্যক্ত করেন। স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, সুদৃঢ় এই প্রতিশ্রুতির কারণেই কম্প্যাক্টটি বাস্তবায়নে জাতিসংঘের অভিবাসন সংক্রান্ত নেটওয়ার্ক পরিচালিত ‘চ্যাম্পিয়নস্ ইনিশিয়েটিভ’-এ যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ।
কোভিড-১৯ অতিমারিতে চাকুরী হারানো, বেতন কর্তন ও সামাজিক সুরক্ষা অভাবের ফলে অভিবাসীগণ যে সকল ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে তাতে আলোকপাত করেন তিনি। চলমান এ সকল সঙ্কট মোকাবিলায় মহাসচিব তাঁর রিপোর্টে বাস্তবভিত্তিক যে সুপারিশমালা তুলে ধরেছেন তার প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
করোনা অতিমারির শুরুতেই বাংলাদেশের সহ-নেতৃত্বে আনীত ‘অভিবাসীদের উপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব’ শীর্ষক যৌথ ইস্তেহারের বিষয়টি রিপোর্টে উল্লেখ করার জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান তিনি। উল্লেখ্য ইস্তেহারটি ১০৩টি দেশের সমর্থন অর্জন করে।
জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অংশীজনদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থেকে সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে ‘ব্যাপকভিত্তিক ৩৬০ ডিগ্রী দৃষ্টিভঙ্গি’-কে সমর্থন জানিয়ে অভিবাসন ব্যবস্থাপনার পরিচালনা পদ্ধতির উন্নয়নে আরও বৈশ্বিক সহযোগিতার উপর জোর দেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। অভিবাসনের উন্নয়ন সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগানোর আহ্বানও জানান তিনি। এজেন্ডা ২০৩০ এর সাথে অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলো সন্নিবেশিত করার জন্য জাতীয় সরকারসমূহ যে সকল প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে তা এগিয়ে নিতে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে তিনি অনুরোধ জানান। অভিবাসী কর্মীদের দক্ষতায়ন, পুন:দক্ষতায়ন ও উন্নত-দক্ষতায়নের জন্য আরও বেশি বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব এবং কোভিড পরবর্তী চাকুরী বাজারে ‘নতুন স্বাভাবিক’ পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে তাদের প্রয়োজনীয় তহবিল সহায়তা প্রদানের উপর জোর দেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানটির উদ্বোধনীতে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার মহাপরিচালক। এরপর অনুষ্ঠিত হয় উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনা। ইভেন্টটিতে পতুর্গাল, গিনি বিসাও ও এলসালভেদর এর পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং কানাডা, মেক্সিকো, মরক্কো, ঘানা ও নেপালের স্থায়ী প্রতিনিধিসহ জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিনিধিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।