॥স্টাফ রিপোর্টার॥ লেবাননের রাজধানী বৈরুত বন্দরের একটি ওয়্যারহাউজে গত মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৪জন বাংলাদেশী নিহত এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীনে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ বিজয়-এর ২১ জন সদস্যসহ প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছে।
লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে। দূতাবাসের প্রথম সচিব(শ্রম) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এ পর্যন্ত ৪জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১০০ জনের মত। এদের মধ্যে ৭৮ জন প্রবাসী বাংলাদেশী এবং ২১জন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সদস্য।
তিনি বলেন, নিহতরা হচ্ছে ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়ার মেহেদী হাসান ও রাসেল, মাদারীপুরের মিজান এবং কুমিল্লার রেজাউল।
আহতদের মধ্যে একজন নৌ সেনার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত মেডিকেল সেন্টারে (এইউবিএমসি) ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যান্যদেরকে ইউনিফিলের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হেলিকপ্টার বা এ্যাম্বুলেন্সযোগে হামুদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা আশঙ্কামুক্ত। শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আহত নৌসদস্যদের চিকিৎসা চলমান রয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর(আইএসপিআর) জানিয়েছে, এই দূর্ঘটনায় নৌবাহিনী জাহাজ বিজয়-এর বিস্তারিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নৌবাহিনী জাহাজ, ইউনিফিল সদর দপ্তর ও বৈরুতস্থ বাংলাদেশী দূতাবাসের সাথে নৌ বাহিনী সদর দপ্তরের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। ইউনিফিল হেড অব মিশন এবং ফোর্স কমান্ডার ও মেরিটাইম টাস্কফোর্স কমান্ডার সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন।
ঘটনার অব্যবহিত পরই বৈরুতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আল মোস্তাহিদুর রহমান সরেজমিনে বানৌজা বিজয় পরিদর্শন করেন এবং আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তর ও যথাযথ চিকিৎসা প্রদানে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল হতে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে।
ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বর্তমানে নৌ বাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’ ইউনিফিলে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রয়েছে। জাহাজটি লেবাননের ভূ-খন্ডে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি লেবানীজ জলসীমায় এই জাহাজ মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের উপর গোয়েন্দা নজরদারী, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানীজ নৌ সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ করে যাচ্ছে।