॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলা সদরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল ১২ই জুলাই রাত সোয়া ৯টায় রেখা বেগম(৪৫) নামক এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত রেখা বেগম রাজবাড়ী শহরের শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ লুৎফর রহমান শিকদার(৪৫)-এর স্ত্রী। তার বাড়ী ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীতে। তারা স্বামী-স্ত্রী দু’জনই করোনা পজেটিভ। করোনার উপসর্গ থাকায় গত ৮ই জুলাই তারা রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নমুনা দেন। গতকাল ১২ই জুলাই বিকালে প্রাপ্ত রিপোর্টে তাদের করোনা পজেটিভ আসে। শহরের শ্রীপুরের ভাড়া বাসায় আইসোলেশনে থাকা লুৎফর রহমান শিকদারের স্ত্রী রেখা বেগমের জ্বর-কাশি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ফরহাদ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত রেখা বেগম ২সন্তানের জননী।
এ ব্যাপারে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় ডাঃ দীপক কুমার বিশ্বাস বলেন, করোনা পজেটিভ ওই নারীকে মৃত অবস্থায় জরুরী বিভাগে আনা হয়েছিল। তার করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আজ বিকালে এসেছে।
এদিকে গতকাল ১২ই জুলাই নতুন করে আরও ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭২৭ জনে।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নূরুল ইসলাম জানান, গতকাল ১২ই জুলাই আরও ১৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। গত ৮ ও ৯ই জুলাই নমুনাগুলো পরীক্ষার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৪০ জনের রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ এসেছে। এর পাশাপাশি ১জনের ১ম ফলোআপ ও ১ জনের ২য় ফলোআপ রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে।
নতুন শনাক্তদের মধ্যে ২৩ জন রাজবাড়ী সদর, ১২ জন পাংশা, ৪ জন কালুখালী ও ১জন বালিয়াকান্দি উপজেলার। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭২৭ জনে।
আক্রান্তদের মধ্যে ৩৫৬ জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন এবং ৫জন মারা গেছেন। এছাড়া ৩৯ জন হাসপাতালে ভর্তি এবং ৩৩৩ জন হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সিভিল সার্জন আরও জানান, এ পর্যন্ত রাজবাড়ী জেলা থেকে ৫ হাজার ৩৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে ৫ হাজার ২৯০ জনের রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে এবং ৫৭ জনের রিপোর্ট পেন্ডিং রয়েছে।
গতকাল ১২ই জুলাই যে ২৭ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে তারা হলেন ঃ রাজবাড়ী পৌরসভার শ্রীপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন(৩০), রেখা বেগম(৪৫) ও তার স্বামী সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের লুৎফর রহমান শিকদার(৫৫), আঃ রাজ্জাক(৫৪), বেড়াডাঙ্গা-১ গ্রামের সেলিনা(৫০), বেড়াডাঙ্গা-২ গ্রামের হাবিবুর রহমান(৫৪), ধুঞ্চি গ্রামের মোজাহার প্রামানিক(৬৪), সজ্জনকান্দা গ্রামের রঞ্জিত কুমার দাস(৫০), ভবাণীপুর গ্রামের ডাঃ কমল কুমার দাস(৫৩), দক্ষিণ ভবাণীপুর গ্রামের সাহারা খাতুন(৭৪), বরাট ইউনিয়নের ভবদিয়া গ্রামের এম.এ হক(৪৫), আতর আলী(৭০), মিজানপুর ইউনিয়নের বেনীনগর গ্রামের রুবেল(২৯), বানীবহ ইউনিয়নের বারী গ্রামের শামীম(২৬), পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের মুকুন্দিয়া গ্রামের মনজুর রহমান(৩৫), ইসলামী ব্যাংকের রাজবাড়ী শাখার আব্দুস সাত্তার(৪২), রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের কবিরুল আলম(৪৬), রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের সীমা খাতুন(৪৪), সিভিল সার্জন অফিসের সঞ্জয় কুমার সরকার(৪০), জেলা আনসার অফিসের শাহাদত হোসেন(৫৩), রাজবাড়ী পুলিশ লাইন্সের শাহীন মিয়া(২৮), বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গণপত্যা গ্রামের বিকাশ সরকার(৪১), বালিয়াকান্দির ইউএফপিও অফিসের মিরাজুদ্দিন(৩০), পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের আকিদুল ইসলাম(২৪), একই ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের শারমিন জাহান(৩৮), রিফা(৭), কুঠিমালিয়াট গ্রামের মাসুদ রানা(২৮), যশাই ইউনিয়নের চরদুর্লভদিয়া গ্রামের মিলন খান(৪০), পূর্ববালি গ্রামের হারুন অর রশিদ(২৬), হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকড়ি গ্রামের নাজিম উদ্দিন(২৩), পাংশা পৌরসভার মাগুরাডাঙ্গী গ্রামের পলাশ হোসেন(৩০), ইদ্রিস আলী শেখ(৩৬), নারায়ণপুর গ্রামের এম.এ রশিদ(৫০), রুমানা ফেরদৌসি(৪২), সদর স্ট্যান্ডের সোহরাব হোসেন(৩০), শিল্পকলা মোড়ের রোখসানা(৩২), কুড়াপাড়া গ্রামের আজমল হোসেন(৩৮), কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের দামুকদিয়া গ্রামের বাঁধন প্রামানিক(২৫), কালিকাপুর ইউনিয়নের মৌকুড়ি গ্রামের কবির হোসেন(৫০), রতনদিয়া ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের জয়দেব সাহা(৪৮)। এছাড়া রাজবাড়ী পৌরসভা এলাকার রেজাউল শরীফ(৫৭) এর ১ম ফলোআপ এবং পাংশা পৌরসভার কলেজ পাড়ার রঞ্জুরুল ইসলাম(৩৪) এর ২য় ফলোআপ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।