॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে গতকাল ১৮ই জুন বেলা সাড়ে ১২টায় দ্বিতীয় লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি-২)-এর আওতায় জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি(ডিসিসি)’র সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় কমিটির সদস্যদের মধ্যে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল কাদের শেখ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নুরমহল আশরাফী, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম রকিব হাসান, পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হেসেন, আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শওকত হাসান ও সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসনের সহকারী কশিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণসহ কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ২য় লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি-২)-এর আওতায় ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে যে সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে বা বাস্তবায়নাধীন আছে এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে কি পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে কি কি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে তার একটি তথ্যভিত্তিক পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল কাদের শেখ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক শওকত আলী বলেন, বর্তমানে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কাগজে-কলমে জেলায় অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড হচ্ছে বলে দেখানো হলেও প্রকৃত অর্থে মাঠ পর্যায়ে এই অবস্থা খুবই ভয়াবহ। জেলার অধিকাংশ কর্মকর্তা মাঠে বাস্তব চিত্র সরেজমিনে পরিদর্শন না করেই তাদের অফিস কেন্দ্রীক কার্য সম্পাদন করছেন। যার ফলে মাঠ পর্যায়ে যে সকল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে সে সব প্রকল্পের কাজ কোয়ালিটি সম্পন্ন হচ্ছে না। কয়েকদিন আগে আমি মাঠ পর্যায়ে কয়েকটি ব্রীজ ও প্রকল্প পরিদর্শন করে এই চিত্র দেখতে পেয়েছি। পরিদর্শনকালীন সময়ে একটি ব্রীজের এমন অবস্থা দেখেছি, ব্রীজটি যেসব মেটারিয়ালস দিয়ে যেভাবে তৈরী করা হচ্ছে তাতে সে হয়তো নিজের ভারটিই রাখতে পারবে না। যা দেখে আমি খুবই হতাশ হয়েছি এবং বাধ্য হয়ে ব্রীজটির কাজ বন্ধ করে দিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ৪সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এই কমিটি ইতিমধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে, যেটি আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি আশা করব, সকল সরকারী বিভাগের কর্মকর্তাগণ তাদের আওতাধীন সকল প্রকল্প সরেজমিনে ভিজিট করে শতভাগ কাজ বুঝে নিবেন। যাতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক সকল কাজ টেকসই হয়। আমি থাকাকালীন সময়ে যদি কোন প্রকল্পের কাজ প্রকল্পের নির্দেশনা অনুযায়ী শতভাগ কোয়ালিটি সম্পন্ন না হয় বা কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন রকম অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় তবে কোন অবস্থাতেই কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পানির অবাধ প্রবাহকে বন্ধ করে যত্রতত্র কলিভার্ট নির্মাণ করা যাবে না। যে সব কালভার্ট নির্মাণ করা হবে সেগুলোর স্থায়িত্ব কতদিন হবে, যানবাহন চলাচলের উপযোগী কিনা সেটি মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যাতে সর্বক্ষেত্রে সরকারের শতভাগ টেকসই উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হয়। এছাড়াও তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রজেক্ট সঠিকভাবে বাস্তবায়নের উপর এবং সকল বিভাগের সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়মিতভাবে মাঠ পরিদর্শনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।