Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

“পদবী”

“পদবী”

 স্মৃতি রায় 

সে দিন ক্লাস শেষে বিকেল বেলা,

মেয়েটি ফিরছিলো বাড়ী, একা

যেতে হবে ঐ যে অদূরের গাঁ।

চঞ্চলা সে, দৃপ্ত পদচারণা।

হঠাৎ কে যেন ডাকলো তারে

ও মেয়ে দাঁড়াবে কি গো?

শোন একটু আমারে।

পাশে তাকাতেই এক মধ্য বয়সী রমনী,

চুলগুলো খোলা, কপালে সিঁদুর

পরনে তার টাঙ্গাইলের শাড়ী।

মেয়েটির অপ্রস্তুত চাহনীতে বলা,

আমায় বলছো গো?

হ্যাঁ গো তোমায়,

এ গাঁয়ে আমি নতুন।

রোজ দেখি যেতে এ পথে,

বড় লক্ষ্মীমন্ত তুমি,

ভারী মিষ্টি মেয়ে।

চোখ যেন প্রজাপতি,

বাসন্তী রঙা বরণ,

মুখ যেন হাতে গড়েছেন বিধাতা,

আহা ধরেছে আমার মনে।

মস্ত হয়েছে ছেলেও আমার,

লেখা-পড়া, জ্ঞানে, গুণে ও মানে।

কি নাম বাবার তোমার,

কোন গাঁয়েতে ঘর ?

মুচকি হেসে মেয়েটি “নাম,

সে তো আমারও আছে…””

বাবার নাম স্বপ্ন সাগর,

ঐ যে গো হৃদয় ডাঙা ঘর।

ও মেয়ে কি বলে তবে ডাকেগো তোমায় সবে?

হেসে নিয়ে খানিক বলল সে,

মল্লিকা বীথি নামে।

এ আবার কেমন বলার ঢঙ,

আগে পরে পদবী কিছু নেই বুঝি তার ?

চাটুজ্জে, বাড়ুজ্জে না পাল ?

 রেগে গিয়ে বললেন আবার,

মোল্লা, মিয়া কিছু একটা বল।

আবার হাসে মেয়েটি,

ছেলের জন্য মেয়ে চাই,

আমায় ধরেছে যখন মনে,

ও সব জেনে কি গো কাজ ?

বললে যখন লক্ষীমন্ত সাঁজ।

থাকগো, তুমি ইচ্ছে মত বসাও পদবী,

এবার তবে যাই।

বলে তো যা হিন্দু, মুসলিম নাকি বৌদ্ধ,

খ্রীস্টান কোনটা তোর জাত ?

চাইছিলে তো পদবী আবার কেন জাত?

আছে গো আছে পদবী একটা শোন তবে,

মল্লিকা বীথি মানুষ।