Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীতে পালিয়ে আসা করোনা আক্রান্ত স্ত্রীসহ পুলিশ সদস্যকে ফের ঢাকায় প্রেরণ॥৩জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের নিজ বাড়ীতে পালিয়ে আসা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সোনিয়া আক্তার(২৫) ও তার স্বামী পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল মালেক সরদার (৩০)কে গতকাল ৯ই এপ্রিল বেলা ১১টায় ফের ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

গতকাল ৯ই এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিট থেকে সোনিয়া আক্তার ও তার স্বামী পুলিশ সদস্য মালেক সরদারকে ঢাকায় কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালে রেফার করা হয়।

রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে পালিয়ে আসা গৃহবধু ও তার স্বামীকে বক্তারপুরের নিজ বাড়ী থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে তাদেরকে ঢাকার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে গত মঙ্গলবার দুপুরে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হওয়া রাজবাড়ীর রোগী সোনিয়া পালিয়ে আসে। বিষয়টি পুলিশ সুপার অবহিত হওয়ার পর আমাকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করলে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে সোনিয়া ও তার স্বামী পুলিশ সদস্য মালেক সরদারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সঙ্গীয় ফোর্সসহ রাত সাড়ে ৩টার দিকে দাদশী ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের ৪টি বাড়ী ঘেরাও করে রাখি। পরে স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় নিজ বাড়ী থেকে সোনিয়া ও তার স্বামী মালেককে গত বুধবার সকালে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয় এবং ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বক্তারপুর ও সমেশপুর গ্রাম লকডাউন করাসহ ৪টি বাড়ীতে হোম কোয়ারেন্টাইন স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়।

ওসি স্বপন কুমার মজুমদার আরো বলেন, পুলিশ কনস্টেবল মোঃ আব্দুল মালেক সরদার পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এসপিবিএন-এ ঢাকায় কর্মরত ছিল। সম্প্রতি তাকে পিবিআইতে বদলী করা হয়েছে। তবে তিনি সেখানে যোগদান করেননি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাঈদুজ্জামান খান বলেন, গৃহবধু সোনিয়ার শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর দাদশী ইউনিয়নের বক্তারপুর ও সমেশপুর গ্রামকে প্রশাসনের নজরদারীতে লকডাউন করে রাখা হয়েছে। সোনিয়ার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শরীরে জ্বর, সর্দি, হাঁচি, কাশির লক্ষণ না দেখা গেলে লকডাউন তুলে নেওয়া হবে।

এদিকে করোনা ভাইরাসের থাকার সন্দেহে গতকাল ৯ই এপ্রিল রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে নতুন ৩জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা হলো ঃ সদর উপজেলার বানিবহের শিহাব মিয়া(২০), বিনোদপুর গ্রামের জহির উদ্দিন(৪৫) এবং ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বকশীপুর গ্রামের অরুন চন্দ্র দাস(৭০) এর নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষার জন্য বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। উল্লেখিতরা বর্তমানে নিজ বাড়ীতে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

আইসোলেশন ইউনিটে বর্তমানে আলতাফ হোসেন(২৫) নামে ১জন রোগী রয়েছে। সে রাজবাড়ী থানার একটি ডাকাতি মামলার আসামী। করোনার উপসর্গ থাকায় আদালতের আদেশে গত ৭ই এপ্রিল বিকাল পৌনে ৬টায় তাকে পুলিশ পাহাড়ায় আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তার বাড়ী পাংশা উপজেলার চর রামনগর কাচারীপাড়া গ্রামে। আইসোলেশন ইউনিটে তার নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।