Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

ইয়াছিন স্কুলের উন্নয়নে যা কিছু প্রয়োজন আমি অবশ্যই করবো —এমপি কাজী কেরামত আলী

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী শহরের ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ে গতকাল ২৬শে জানুয়ারী বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন ও বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিদ্যালয়ের বিদায়ী প্রধান শিক্ষক সাইদা খানম, অন্যান্যের মধ্যে রাজবাড়ী কিন্ডার গার্টেনের অধ্যক্ষ নুরুল হক আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহ্রাব, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জিঃ আমজাদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইকবাল হোসেন। এ সময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ, শিক্ষক মন্ডলী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, রাজবাড়ী শহরের পুরাতন স্কুলগুলোর মধ্যে ইয়াছিন স্কুলটি ঐতিহ্যবাহী ও সুনামধন্য একটি স্কুল। আমি এই স্কুলের ছাত্র ছিলাম। তাই এই স্কুলের উন্নয়নে যা কিছু করা প্রয়োজন আমি অবশ্যই করবো। ইতিমধ্যে স্কুলের ভবন ঊর্ধ্বমুখী করা ও নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়টি জানার পর আমি সরকারের ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত করেছি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীগণ স্কুলের বিল্ডিং করার জন্য সার্ভে করতে আসবেন। তখন তাদেরকে পছন্দ ও প্রয়োজন মতো কোথায় কী করতে হবে তাদেরকে জানালে তারা সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। বর্তমান সরকারের আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের সময়ে স্কুলের লেখাপড়ার মান ও রেজাল্ট অনেক খারাপ ছিল। কিন্তু বর্তমানে স্কুলের সভাপতি পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, বিদায়ী প্রধান শিক্ষক সাইদা খানম এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসানসহ স্কুলের শিক্ষক মন্ডলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্কুলটি জেলার মধ্যে ভালো একটি স্কুলে পরিণত হয়েছে। সে জন্য রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ও রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো এই স্কুলে ভর্তি হতে আমার কাছে অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা সুপারিশের জন্য আসেন। আশা করি শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট আগামীতে আরো ভালো করার মাধ্যমে স্কুলটি আরো সুন্দর হবে এবং বর্তমান সরকারের ভিশন অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যম আয়ের দেশে ও ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত সোনার বাংলাদেশে পরিণত হতে স্কুলের শিক্ষর্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে স্কুলের পরিচালনা কমিটির উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরো বেশী জানার জন্য তার জন্মশতবার্ষিকীতে বিশেষ আনুষ্ঠান আয়োজন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বের মধ্যে বিরল বছরের প্রথম দিনে ৩৬ কোটি বই বিতরণ, ইয়াছিন স্কুলকে কলেজিয়েট স্কুল করা এবং শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার ব্যবস্থা করাসহ স্কুলের বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করেন। বক্তব্যের শেষে তিনি পায়রা উড়িয়ে ও মশাল প্রজ্বালনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, আমি সভাপতি হওয়ার আগে স্কুলটি খুব ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। লেখাপড়ার মানও অনেক খারাপ ছিল। সেই ভঙ্গুর অবস্থা থেকে স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান সকল শিক্ষকদের এবং ম্যানেজিং কমিটির সকলের সহযোগিতায় উন্নয়ন করে বর্তমান অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে। আমরা তখনই আত্মতৃপ্তি পাবো যখন স্কুলটি রাজবাড়ী জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্কুলে পরিণত হবে।
এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ম-শৃঙ্খলা, শতভাগ উপস্থিতি, পরীক্ষায় সকল বিষয়ে পাস করা, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়সহ সকল শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ভালো রেজাল্ট ও মন দিয়ে লেখাপড়া করবে তাদেরকে সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সভাপতিসহ অন্যান্য অতিথিগণ বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশতবাষিকী কর্ণার’ পরিদর্শন করেন।