॥স্টাফ রিপোর্টার॥ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি বলেছেন, শিশুর জীবনের জন্য প্রথম এক হাজার দিন বা তিন বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ-যা শিশুর জীবনের স্বর্ণ সময়। এই সময়ে শিশুর আশি ভাগ বুদ্ধির বিকাশ হয়। শিশুর প্রারম্ভিক জীবনের জন্য এক টাকা বিনিয়োগ করলে সেটা পরিণত বয়সে তেরোগুণ রিটার্ন প্রদান করে। বাংলাদেশ সরকার শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের জন্য ২০১৩ সালে শিশুর প্রারম্ভিক যত্ম ও বিকাশের সমন্বিত নীতি প্রণয়ন করেছে এবং বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন ও বিশেষ করে এসডিজি গোল ৪.২ শিশুর শিক্ষা ও প্রারম্ভিক বিকাশ অর্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
গতকাল ৪ঠা ডিসেম্বর ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের একটি হোটেলে ৩দিনব্যাপী ‘এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল আরলি চাইল্ড হুড ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স-২০১৯’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ভিয়েতনামের উপ-প্রধানমন্ত্রী ভু ডুক ড্যাম এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল নেটওয়ার্ক ফর আরলি চাইল্ডহুড(আরনেক) এবং ভিয়েতনামের মিনিস্ট্রি অব লেবার, ইনভ্যালিডস এন্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এর যৌথ আয়োজনে আয়োজিত এই কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন। এবারের কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য ‘সম্মিলিত কাজের মাধ্যমে শিশুর বিকাশ ও পরিবেশ উন্নয়ন।’
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আরো বলেন, বাংলাদেশ শিশু অধিকার সনদ-১৯৮৯ এর স্বাক্ষরকারী প্রথম ২২টি দেশের মধ্যে একটি। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুর অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ১৫বছর পূর্বেই ‘শিশু আইন ১৯৭৪’ প্রণয়ন করেন। বাংলাদেশের ১৫টি মন্ত্রণালয় শিশুকেন্দ্রীক বাজেট বাস্তবায়ন করছে এবং সরকার মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচী চালু করেছে-যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতসহ শিশুর জীবনের প্রথম এক হাজার দিনের পরিপূর্ণ বিকাশে সাহায্য করবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের সাথে সমন্বয় করে বাংলাদেশ সরকার শিশুর বয়স ৪বছর থেকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু, প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলে মিড ডে মিল ও মাসিক বৃত্তি প্রদান করছে। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় এগারো লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু যারা তাদের নিজ দেশে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ও মানবেতর অবস্থায় শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থান করছে সেসব শিশুদের নিরাপদ জীবন ও তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কনফারেন্সে উপস্থিত এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও তাদের জন্য নিরাপদ গৃহ, পরিবেশ ও পৃথিবী গড়ার বিষয়ে প্রত্যয় ব্যক্ত করে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য বলেন, আজকের শিশুরা আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের সুন্দর জীবনের শুরু ও বিকাশের জন্য সরকার, বেসরকারী সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী ও সুশীল সমাজ সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।