॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা পৌর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে দলীয় কার্যক্রম।
বিগত সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন তৎকালীন পৌর মেয়র ওয়াজেদ আলী মন্ডল এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন ওদুদ সরদার। সেই কমিটির উল্লেখযোগ্য কোন কর্মকান্ড ছিল না।
চলতি বছরের গত ২৮শে জানুয়ারী পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পাংশা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজেদ আলী মাস্টারসহ ৩জনকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত অপর ২জন হলেন ঃ পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান) ফরিদ হাসান ওদুদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক দীবালোক কুন্ডু জীবন। বহিস্কারের আগে তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল। ২জন কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিলেও ওয়াজেদ আলী মাস্টার কারণ কোনো জবাব দেয়নি। এখন পর্যন্ত দলীয় সভায় তাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিমের বাড়ী পাংশায় হওয়ার কারণে সেখানকার নেতাকর্মীদের মধ্যে সবসময়ই শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকে। নতুন সম্মেলনের দিন-তারিখ ঠিক না হলেও আশা করা হচ্ছে দ্রুতই সম্পন্ন হবে পাংশা পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরী হয়েছে। চারিদিকে সাজ সাজ রব উঠেছে। পাংশা পৌর এলাকার অলিগলি নেতাদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বহিস্কৃত নেতা ছাড়াও আরো অনেক নেতাকর্মী গুরুত্বপূর্ণ পদে আসার জন্য লবিং ও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শীর্ষ পদে সৎ, যোগ্য, মেধাবী ও দলের জন্য নিবেদিতরাই স্থান পাবেন বলে তারা মনে করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান কমিটির বহিস্কৃত সভাপতি ওয়াজেদ আলী মন্ডল এবারও সভাপতি হওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, আগামী সম্মেলনের ব্যাপারে নেতাকর্মীরাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। নেতাকর্মীরা যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন তাহলে আবারও আমাকে সভাপতি হিসেবে কাজ করার সুযোগ দিবেন। তবে নবীণ-প্রবীণদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা গেলে সেই কমিটি অধিক গতিশীল ও কার্যকর হবে বলে তিনি মনে করেন।
পদ প্রত্যাশী আরেক নেতা পাংশা উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বালু ও ক্লিনিক ব্যবসায়ী দীপক কুমার কুন্ডু বলেন, দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার ¯েœহভাজন নেতা মোঃ জিল্লুল হাকিমের নেতৃত্বে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এমপি জিল্লুল হাকিমের পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আশিক মাহমুদ মিতুল হাকিমের সাথেও কাজ করছি।
পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সফলতা কামনা করে তিনি বলেন, সম্মেলন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক, সুন্দর একটি কমিটি হোক-এটাই আমি চাই। নেতাকর্মীরা চাইলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত।
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওদুদ সরদার বলেন, আমার ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আমার কর্মকান্ড বিচার করে যদি আমাকে প্রার্থী হতে বলেন সে ক্ষেত্রে আমি প্রার্থী হবো।
নেতাকর্মীরা জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিম পাংশা-বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলাতে দলকে সুসংগঠিত করছেন। নেতাকর্মীরাও তার নেতৃত্বে আস্থা রেখেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তার সাথে যোগাযোগ করেই পাংশা পৌর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে প্রার্থী হবেন। বর্তমানে যারা নেতৃত্বে রয়েছেন তারা দলের জন্য কাজ করেছেন- এটা সত্য, তবে দলে নতুন নেতৃত্ব আসলে দল আরো গতিশীল হবে বলে তারা প্রত্যাশা করেন।
সম্মেলনের বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপি বলেন, সম্মেলন দলকে সুসংগঠিত করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। পাংশা পৌর এলাকার নেতাকর্মীরা যেভাবে সম্মেলন প্রত্যাশা করেন-তিনি সেভাবেই সহযোগিতা করবেন।
তিনি আরও বলেন, ভোটের মাধ্যমে সম্মেলনে সবসময় ভালো কমিটি গঠন করা যায় না। সেক্ষেত্রে একাধিক প্রার্থী হলে প্রথমে সমাঝোতার চেষ্টা করা হবে। সমাঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠন করা না গেলে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে।