॥এম.এইচ আক্কাছ॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের কেউটিল গ্রামের হিন্দু পরিবারের এক গৃহবধূ নোটারী পাবলিকের কাছে এফিডেভিটের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়ে পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে করলেও সেই বিয়ের বৈধতা না পাওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত দু’জনকেই সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।
ওই গৃহবধূর নাম সীমা প্রামানিক(২৫)। সে কালুখালী উপজেলার খাগজানা গ্রামের মৃত হরিপদ প্রামানিকের মেয়ে। ৮বছর আগে কেউটিল গ্রামের অশোক সরকারের ছেলে মানিক সরকারের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের ৬বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। কয়েক মাস আগে স্বামীর বাড়ী থেকে বাবার বাড়ীতে যাতায়াতকালে সীমা প্রামানিকের সাথে পদ্মা-গড়াই পরিবহনের বাস চালক মীর রফিকুল হাসানের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মীর রফিকুল হাসান(৩০) বালিয়াকান্দি উপজেলার পাইককান্দি গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। এই পরকীয়ার জেরে গত ১৪ই অক্টোবর সীমা প্রামানিক রাজবাড়ীর এক নোটারী পাবলিকের কাছে এভিডেভিটের মাধ্যমে স্বামী মানিক সরকারকে তালাক দেয় এবং ২১শে অক্টোবর আরো ২টি এফিডেভিটের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রাফিয়া সুলতানা মরিয়ম নাম ধারণ করে মীর রফিকুল হাসানকে বিয়ে করে। এরপর থেকে তারা রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামের জনৈক ফজলুর বাড়ীতে ঘর ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে থাকে।
সম্প্রতি সীমা প্রামানিকের সাবেক স্বামী মানিক সরকার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় সীমা প্রামানিকের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার চুরির অভিযোগ করলে পুলিশ গত ৬ই নভেম্বর রাতে সীমা ও রফিকুলকে আটক করে পরদিন ৭ই নভেম্বর গোয়ালন্দ উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুনের নিকট হাজির করে। তিনি উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ ও এফিডেভিটের কাগজপত্র পর্যালোচনা পূর্বক সীমা ও রফিকুলের বিয়েকে অবৈধ ঘোষণা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে দু’জনকে ৩দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যেহেতু তারা উভয়েই পূর্ণ বয়ষ্ক সেই হিসেবে তারা ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করতেই পারে। বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হতে পারে। কিন্তু সে বিয়ের বৈধতা পেতে হলে বিয়ের রেজিস্ট্রি বা কাবিননামা করে আইন মানতে হবে। তাই বিয়ের কাবিননামা না থাকায় তাদেরকে ৩দিনের সাজা দিয়ে রাজবাড়ী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।