Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

জিয়ার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় —হাসানুল হক ইনু

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাসদের(ইনু) উদ্যোগে গতকাল ৭ই নভেম্বর বেলা ১১টায় রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ জাসদ কার্যালয়ের শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর জাসদের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। ঢাকা মহানগর জাসদের যুগ্ম-সমন্বয়ক নূরুল আখতারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, শহীদ কর্নেল তাহেরের ছোট ভাই ও জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, জাসদ নেতা ফজলুর রহমান বাবুল, শফি উদ্দিন মোল্লা, শহীদুল ইসলাম, রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, সাইফুজ্জামান বাদশা, মীর্জা আনোয়ারুল হক, মাইনুর রহমান, একেএম শাহ আলম, এড. মহিবুর রহমান মিহির, ইদ্রিস আলী, সৈয়দা শামীমা সুলতানা হ্যাপী, মাহবুবুর রহমান ও আহসান হাবিব শামীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের নেতৃত্বে সিপাহী বিদ্রোহ, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান ছিল বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা, অবৈধ ক্ষমতা দখল, সংবিধান লঙ্ঘন, সামরিক শাসন জারী, সেনাবাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ক্ষমতালিপ্সু অফিসার ব্যক্তিগত ক্ষমতা দখলের জন্য পাগলা কুকুরের মতো কামড়াকামড়ি বন্ধ করতে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা-সংকট দূর করতে এবং সেনা বাহিনীসহ ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে এক মহান বিপ্লবী প্রচেষ্টা। কিন্তু জিয়ার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে সিপাহী-জনতার সেই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, জিয়া সিপাহীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠে। কর্নেল তাহেরকে সাজানো মিথ্যা মামলায় বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে কয়েকশত অফিসার ও সৈনিককে হত্যা করে। জলিল, রব, সিরাজুল আলম খান, রবিউল আলমসহ জাসদের নেতাদের সামরিক আদালতে মিথ্যা মামরায় প্রহসনমূলক বিচারে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়ে অমানবিক কারানির্যাতন চালায়। সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা জিয়ার বিশ্বাস ঘাতকতায় সফল না হলেও ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামোর উপর আঘাত হানে। ইতিহাস ৭ই নভেম্বরের ঘটনায় কর্নেল তাহেরকে মহানায়ক আর জিয়াকে খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যারা ৭ই নভেম্বরকে অফিসার হত্যা বা বিপ্লব-সংহতি হিসেবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে তারা আসলে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী ও ক্ষমতালিপ্সু অফিসারদের কামড়াকামড়ির কুৎসিত ঘটনা আড়াল করতে চায়।
ইনু বঙ্গবন্ধু হত্যা প্রসঙ্গে বলেন, জিয়া-খালেদ-শাফায়াত জামিলসহ সবাই কী আঙুল চুষছিল? খালেদ বঙ্গবন্ধুর খুনীদের শায়েস্তা করতে না, নিজে ক্ষমতা দখল করতে অভ্যুত্থান করেছিল। খালেদ বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার খুনীদের নিরাপদে দেশত্যাগ করার সুযোগ করে দেয়। খালেদ খুনী মোশতাককে আটক করাতো দূরের কথা তার সাথেই যোগসাজশে নিজে সেনাপ্রধানের ব্যাজ লাগান। শহীদ কর্নেল তাহের শুধু আদালতের রায়েই একজন মহান দেশপ্রেমিক বিপ্লবী না, কর্নেল তাহের জনতার বিচারেও একজন মহান দেশপ্রেমিক বিপ্লবী। জাসদ কর্নেল তাহেরের চেতনাকে ধারণ করেই শোষন-বৈষম্য-বঞ্চনামুক্ত দেশ গড়ার সংগ্রাম করে যাচ্ছে। জাসদের সুশাসনের জন্য সংগ্রাম আর শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান একে অপরের পরিপূরক।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু কর্নেল তাহেরের মতো সাহস নিয়ে দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের আখড়ায় আঘাত হানার জন্য প্রস্তুত হতে জাসদের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।