Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় ইলিশ মাছ ধরতে নদীতে নেমে পড়েছে রাজবাড়ীর জেলেরা

॥চঞ্চল সরদার॥ ইলিশ মাছ না ধরার ২২দিনের সরকারী নিষেধাজ্ঞা গত ৩০শে অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। এরপর থেকে ইলিশ মাছ ধরতে নদীতে নেমে পড়েছে রাজবাড়ীর জেলেরা।
যারা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন কয়েকদিন আগে থেকেই। নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলেরা মাছ ধরার জাল-নৌকাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ঠিকঠাক করতে ব্যস্ত রয়েছে।
সূর্যনগর এলাকার কালাম শিকদার নামের একজন জেলে বলেন, ২২দিনের সরকারী নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেই আমরা নদীতে ইলিশ শিকারে নামবো। এ জন্য কয়েকদিন ধরে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের মাছ ধরার জিনিসগুলো ভালোভাবে ঠিক করে নিচ্ছি, যাতে কোন সমস্যা না হয়।
জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ৯ই অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর থেকে শেষ দিন ৩০শে অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ রক্ষা অভিযানে রাজবাড়ী জেলায় মোট ৩৯৪ জন জেলেকে আটক করা হয়। তার মধ্যে ২৯৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং ৯৭ জনের কাছ থেকে মোট ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এর পাশাপাশি ৩৮ লক্ষ ৭৬ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস এবং ৩ হাজার ৮০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে বিভিন্ন এতিমখানা, মাদ্রাসা ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ৪টি জেলে নৌকা জব্দ করে নিলামে ৬৬ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
এছাড়াও নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে পুলিশের ইউনিফর্ম খুলে জেলে নৌকায় রেখে জেলেদের সাথে ইলিশ মাছ ধরা সময় পুলিশ লাইন্স ও কোর্ট পুলিশের ২জন পুলিশ সদস্য এবং সদর উপজেলা মৎস্য অফিসের ২জন কর্মচারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাঈদ আহম্মেদের মোটর সাইকেলসহ আটক হওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাঃ মজিনুর রহমান বলেন, ২২দিনের সরকারী নিষেধাজ্ঞার মূল্য উদ্দেশ্য ছিল সমুদ্র থেকে নদীতে ডিম পাড়তে আসা মা ইলিশ যেন নির্বিঘেœ ডিম পাড়তে পারে সেটা নির্বিঘœ করা। এবার আমাদের রাজবাড়ী জেলার নদীতে যে পরিমাণে ইলিশ মাছ এসেছে তার অন্ততঃ ৫০ ভাগ সুষ্ঠুভাবে ডিম পাড়তে পেরেছে। এই ডিমের ১০ শতাংশও যদি বেঁচে থাকে তাহলে ইলিশ মাছে নদী ভরে যাওয়ার কথা। নদীতে যে পরিমাণ মা ইলিশ ডিম পেড়েছে সেগুলোকে যদি আমরা রক্ষা করে বড় করতে পারি তাহলে আগামীতে মাছের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে।