॥পাংশা প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউপিতে আবার দুর্বৃত্তদের তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে জনমনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে।
জানাগেছে, গত ১লা মে রাতে কসবামাজাইল ইউপির ডেমনামারা গ্রামের আক্কাস মন্ডল ওরফে আকন মন্ডলের বাড়ীতে মুখোশ পরিহিত একদল দুর্বৃত্ত হানা দেয়। এর আগে কৃষক পরিবারের আকন মন্ডলের ছেলে দিনমজুর আরিফের কাছে ৫হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের ভয়ে আকন মন্ডলের ছেলে আরিফ ওইদিন রাতে অন্যের বাড়ীতে রাতযাপন করে। ফলে দুর্বৃত্তরা ওইদিন রাতে আকন মন্ডলের বাড়ীতে গিয়ে আরিফকে না পেয়ে ফিরে যায়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে আরিফ দুর্বৃত্তদের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। এ নিয়ে আকন মন্ডল নানাবিধ কারণে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না এবং অজানা আতংকের মধ্যে রয়েছে তার পরিবার। এ ঘটনা জানাজানি হলে গত বুধবার রাতে কসবামাজাইল ইউপির কোনো এক বাড়ীতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে আকন মন্ডল উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বৈঠক ত্যাগ করে নিজ বাড়ীতে ফিরে যান তিনি।
গত ২২শে জানুয়ারী কসবামাজাইল ইউপিতে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কসবামাজাইল ইউপির স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থী জজ আলী বিশ্বাস ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানের সমর্থিত দুই গ্রুপের লোকজনের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, বাড়ী-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ এবং ইলিয়াস হোসেন নামের এক কলেজ ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনার আগে গত বছরের ১৬ই আগস্ট রাতে কসবামাজাইল ইউপির কুঠিমালিয়াট গ্রামের বাবু মন্ডলের বাড়ীতে ডাকাতি হয়। ৩০শে আগষ্ট কুঠিমালিয়াট গ্রামের শরিফ মোল্লা, একই গ্রামের মান্নান মহুরী এবং দীঘলহাট গ্রামের অলোক শিকদারের বাড়ীতে ডাকাতি হয়। ঘটনার পর থেকে দুর্বৃত্তরা মান্নান মহুরী ও তার ছেলের মোবাইল ফোনে বারংবার চাঁদদাবী করে আসছিল। দুর্বৃত্তদের ভয়ে মান্নান মহুরী ও তার ছেলেরা পাংশা শহরে বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে। ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে কুঠিমালিয়াট গ্রামের খায়রুল ইসলাম অরফে ডাবুল, সাগর কুমার রায়, উজ্জল কুমার ও টুটুল মন্ডলের বাড়ীতে দুর্বৃত্তরা হানা দেয়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম কসবামাজাইল ইউপিতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের বিবাদ মীমাংসা করে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এছাড়া পাংশা থানা পুলিশ ও কসবামাজাইল তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে পুলিশী তৎপরতা জোরদার করেন। এর ফলে কসবামাজাইল ইউপিতে শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করে। কিন্তু বর্তমানে আবার দুর্বৃত্তদের তৎপরতার কারণে জনমনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে।