Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীতে নিজের মাকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্কুল ছাত্রী মেয়ে

॥শিহাবুর রহমান/ইউসুফ মিয়া॥ রাজবাড়ীতে খালাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে না দেয়া ও মোবাইলে কথা নিয়ে আপন মাকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে মোমেনা খাতুন বৃষ্টি (১৪) নামে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী। গত ৪ঠা অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের আগমাড়াই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মহিলার নাম নাজমিন আক্তার (৪০)। সে আগমাড়াই গ্রামের আব্দুল মান্নান মৃধার স্ত্রী।
রাজবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদার জানান, মোমেনার সাথে তার খালাতো ভাই সাজ্জাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এতে রাজী ছিল না মোমেনার মা নাজমিন আক্তার। বিষয়টি নিয়ে ইতিপূর্বে মোমেনার মা তাকে সাজ্জাদের সাথে কথা বলতে নিষেধও করে। কিন্তু এরপরও মোমেনা পাশর্^বতী এক বান্ধবীর বাড়ীতে গিয়ে মোবাইলে সাজ্জাদের সাথে কথা বলতো। শুক্রবার (৪ঠা অক্টোবর) সন্ধ্যার একটু আগে মোমেনা তার বান্ধবীর বাড়ীতে গিয়ে সাজ্জাদের সাথে মোবাইলে কথা বলে। বাড়ীতে আসার পর এ নিয়ে মায়ের সাথে তার কথাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সে ঘরে থাকা ধারালো বটি দিয়ে তার মাকে উপযুপরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ ঘটনার পর রাতেই গুরুতর অবস্থায় ঢাকা নেয়ার পথে সে মারা যায়।
তিনি আরো জানান, মাকে কুপিয়ে হত্যার পর মেয়ে মোমেনা খাতুন ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য প্রকাশ করে যে তার মা সন্ধ্যার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘরের মধ্যে খাটের উপর শুয়ে পড়ে। এসময় মোমেনা তার কাছে খাবার চাইলে সে তাকে বটি ও পেঁয়াজ নিয়ে আসতে বলে। এরপর সে রান্না ঘর থেকে বটি নিয়ে ঘরের মধ্যে রেখে আবার রান্নাঘরে পেঁয়াজ আনতে যায়। এসময় তার মা খাট থেকে নিচে বটির উপর পড়ে রক্তাক্ত জখম হয়। মোমেনার বাবা আঃ মান্নান মৃধাও একই কথা বলেন। কিন্তু বিষয়টি রহস্যজনক মনে হওয়ায় সকালে স্থানীয় দুই যুবকসহ মোমেনা ও তার বাবা আব্দুল মান্নান মৃধা এবং তার ভাই মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মোমেনা হত্যার দায় স্বীকার করে এবং ঘটনার বর্ণনা করেন।
এ ঘটনার পর একই দিন বিকেলে মোমেনাকে আদালতে হাজির করা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে সে জবানবন্দী প্রদান করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা আব্দুল মান্নান মৃধা বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।