Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

যাদের পিতা-মাতা জীবিত রয়েছেন তাদের উচিত সবসময় তাদের দেখাশোনা করা— জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে ‘বয়সের সমতার পথে যাত্রা’-শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও প্রবীণ হিতৈষী সংঘের জেলা শাখার আয়োজনে গতকাল ১লা অক্টোবর র‌্যালী, আলোচনা সভা এবং ‘মমতাময়’ ও ‘মমতাময়ী’ পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
সকাল ১০টায় কালেক্টরেটের আ¤্রকানন চত্বর থেকে র‌্যালীটি বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-এর সভাপতি প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা, জেলা প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল জলিল, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মীর আব্দুল আওয়াল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ এবং প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সভাপতি এডঃ আজিজুর রহমানসহ প্রবীণগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় দেড় কোটি প্রবীণ রয়েছেন। দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে এই সংখ্যা ক্রমান্বয়ে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবীণরা যাতে ভালো থাকেন সে জন্য সরকার পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন-২০১৩, বয়ষ্ক ভাতা ও চিকিৎসা সুবিধাসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী বর্তমান সরকারের উন্নয়নের যে ধারা তা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের পর দেশের কেউ গরীব থাকবে না। যাদের পিতা-মাতা এখনও জীবিত রয়েছেন তাদের উচিত সবসময় তাদের দেখাশোনা করা এবং তারা যাতে ভালো থাকেন সেই চেষ্টা করা। অনেকে আছেন যাদের সবকিছু থাকা সত্ত্বেও পিতা-মাতার সাথে খারাপ ব্যবহারসহ তাদেরকে দেখাশোনা করেন না-যা খুবই দুঃখজনক ও কষ্টকর। আমার অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় চাকরী করার কারণে সদিচ্ছা থাকলেও পিতা-মাতাকে সঙ্গ দিতে পারি না। আবার তাদেরকে যদি নতুন পরিবেশে এনে রাখি তাহলে তারাও চার দেয়ালের মাঝে নিজেদের স্বাধীনমতো চলাফেরা বা পরিচিতজনদের সাথে সময় কাটাতে পাবেন না। সুতরাং তারা যেখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন সেখানেই তাদেরকে রাখাতে হবে, যাতে তারা তাদের পরিচিতজনদের সাথে সময় কাটাতে পারেন। এতে তাদের শরীর ও মন ভালো থাকবে। মনে রাখতে হবে আমাদের সকলকেই একসময় প্রবীণ হতে হবে। সে জন্য প্রবীণদের কীভাবে শ্রদ্ধা-সম্মান করতে হয় তা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্কুল জীবন থেকেই শেখাতে হবে। প্রবীণ দিবসসহ প্রবীণদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিশুদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এভাবে অগ্রসর হলে দেশের সকল প্রবীণকে গুরুজন মেনে নবীণরা যথাযথ সম্মান দিবে। আজকের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত আছেন তাদের অনেকেই আমার বাবার বয়সী। সুতরাং আপনাদের জন্য আমার পক্ষ থেকে যা কিছু করার আমি করবো। খেলাধুলার সামগ্রী, স্বাধীনতা-বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন সরকারী অনুষ্ঠানে আসন সংরক্ষণ, চিকিৎসা সেবাসহ আপনাদের যেসব দাবী রয়েছে সেগুলো আমি গুরুত্ব সহকারে দেখবো। আলোচনা সভার শেষে প্রবীণদের প্রতি যতœ নেয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ নির্বাচিত ২ জন পুরুষ ও নারীকে ‘মমতাময়’ ও ‘মমতাময়ী’ পুরষ্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।