Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ১৬ই এপ্রিল সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক জিনাত আরা’র সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ক্রাইম) মোঃ আছাদুজ্জামান, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি এমওসিএস ডাঃ কাজী শফিউল আজম, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল হামিদ খান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী গৌরপদ সূত্রধর ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কশিশনারগণ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক জিনাত আরা তার বক্তব্যের শুরুতে সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জেলার উন্নয়নে সকল সরকারী বিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে সকলেরই মনে রাখতে হবে, যে বিভাগ যে কাজ করছে সেটি যেন দৃশ্যমান ও স্বচ্ছ হয়। গত সভায় বহরপুর প্রাইমারী স্কুলের খেলার মাঠের জায়গা দখল করে ১৮টি দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। কোন অবস্থাতেই খেলার মাঠ বা স্কুলের জায়গা দখল করে অন্য কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। যাতে করে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হয়। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কালুখালী উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে যে অবৈধ স্থাপনা ছিল সেগুলো সরানো হয়েছে। এরপরও জমিতে যাতায়াতের কিছু সমস্যা আছে। আগামীতে জমির মালিকগণের সাথে আলোচনা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। রাজবাড়ী শহরে প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের সমস্যা হচ্ছে। একটু বাতাস হলেই বিদ্যুতের বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে। যা মোটেও কাম্য নয়। আজকে সকালে একটু বাতাসে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর ঘন্টার পর ঘন্টা পার হলেও বিদ্যুৎ নেই। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সভা থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিনিয়ত এই ধরনের সমস্যার জন্য অসন্তোষ প্রকাশের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ নদী ভাঙ্গন প্রবণ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন প্রকল্প এখনও গ্রহণ করেনি। যার ফলে আসন্ন বর্ষা মওসুমে শহর রক্ষা বাঁধ ও দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় সমস্যা সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সে বিষয়ে লিখিতভাবে জানানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে সভা থেকে আহবান জানান।
তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে সফলতা অর্জনের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও জেলার শিক্ষা কার্যক্রমে কোন কর্মকর্তার কোন প্রকার গাফিলতি কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়াও সভায় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন কর্মচারীদের পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে গাফিলতি, বিভিন্ন অজুহাতে মারাত্মক অসুস্থ্য রোগীদের পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পাসপোর্ট না দেওয়া, শহরের পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্টে নদীর পানি ব্যবহার, সদর হাসপাতালসহ রাজবাড়ী জেলার সকল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও জনবল সমস্যা, রাস্তার পাশে ও বিভিন্ন সরকারী স্থাপনা নির্মাণে বন বিভাগ ও জেলা পরিষদের গাছ অপসারণ নিয়ে দ্বন্দ্ব বা গাছ অপসারণের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ রক্ষনাবেক্ষণ ও বন্যার আগে নতুন প্রকল্প গ্রহণ না করা, এলজিইডির শতভাগ অনলাইন দরপত্রের আহবানের বিষয়, কর্মকর্তাদের স্কুল পরিদর্শন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মডেল মসজিদ নির্মাণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।