Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দৌলতদিয়া ঘাটে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বোর্ডিংগুলো অপরাধের আখড়া

॥সোহেল মিয়া॥ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীকে কেন্দ্র করে রেলস্টেশনের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দেড় শতাধিক বোর্ডিং অপরাধের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
কোন নিয়ম-নীতি না থাকায় এ সকল বোর্ডিংয়ে চলছে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড। প্রশাসনের তেমন কোন নজরদারী না থাকায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে বোর্ডিংগুলোর মালিকরা। দাগী অপরাধীরা এখানে এসে নির্ভয়ে আত্মগোপনে থাকছে দিনের পর দিন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট রেলস্টেশনের দুই পাশে গড়ে ওঠা বোর্ডিংগুলোর কোনটিরই বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। নিজেদের ইচ্ছামত রেলের জায়গা দখল করে ঘর তুলে তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর প্রবেশ পথের প্রধান গেটের দু’পাশেই রয়েছে বোর্ডিং। বোর্ডিং ব্যবসার পাশাপাশি সেগুলোতে দিন-দুপুরেই চলছে জুয়া, মাদকসহ নারী ব্যবসা। মাঝে-মধ্যেই এ সকল বোর্ডিং থেকে লাশ উদ্ধার হয়, যাদের বেশীরভাগই অজ্ঞাত। লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।
বোর্ডিংয়ে জুয়া-মাদকসহ সকল অপকর্মের কথা অস্বীকার করলেন বোর্ডিং মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল কাশেম। তিনি বলেন, আমরা এতদিন যে অনিয়মটা করেছি সেটা হলো আমাদের এখানে কেউ রাত্রি যাপন করলে আমরা তার নাম-ঠিকানা এন্ট্রি করতাম না। যে আসতো তাকেই থাকতে দিতাম। সম্প্রতি গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আমাদেরকে ডেকে যারাই থাকুক তাদের সম্পূর্ণ নাম-ঠিকানা রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করতে বলার পর থেকে আমরা তা করছি। তিনি রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নিয়ে বোর্ডিংয়ের ঘর উত্তোলন করার দাবী করলেও লিজের বৈধ কোন কাগজ কোন বোর্ডিংই দেখাতে পারেনি।
এ ব্যাপারে দৌলতদিয়া ঘাট রেল স্টেশনের মাস্টার আব্দুল গণি’র সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজী হননি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, মূলত পতিতাপল্লীকে কেন্দ্র করেই এ সকল বোর্ডিং গড়ে উঠেছে। এরা কোন নিয়ম-কানুন মানতো না। ইতিমধ্যে আমরা সবাইকে ডেকে আইনের মধ্যে থেকে ব্যবসা করার নির্দেশ দিয়েছি।
পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম (বার) বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটের চিত্র পাল্টে যাবে। আপনারা দেখেছেন ঘাটকে কেন্দ্র করে এতদিন যে দালাল চক্র ছিল তা কিন্তু এখন আর নেই। এরই মধ্যে আমি ঘাটকে সিসি ক্যামেরার আওতায় এনেছি। ঘাটে কোন রকম অরাজকতা কাউকে করতে দিব না। দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীকে ঘিরে যারা এতদিন অবৈধ টাকা আয় করেছে এখন তারা আর সেটি করতে পারবে না। দৌলতদিয়া রেল স্টেশন এলাকার বোর্ডিংগুলোতে আগে কোন রেজিস্টার খাতা ছিল না। যার কারণে অনেক দাগী অপরাধী এসে আত্মগোপনে থাকতো। আমি সবাইকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি তোমাদের রেজিস্টার খাতা থাকতে হবে এবং যেই থাকুক না কেন তার সকল পরিচয় রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করতে হবে।