Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউপি নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন

॥বিশেষ প্রতিনিধি॥ দীর্ঘ ৮বছর পর গতকাল সোমবার রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নদী ভাঙনে সীমানা জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ের ৩বছর পর নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক হলেও বন্যা জনিত কারণে স্থগিত হওয়ায় ৫৩দিন পর গতকাল ১৬ই সেপ্টেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর ভোট দিতে আসা মানুষের ভিড়ে প্রতিটি কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরী হয়।
গতকাল সোমবার সকাল থেকে ভোট গ্রহণ শুরু করে বিকেল পর্যন্ত কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটের আগের দিন রাতে দৌলতদিয়া ইউপির ৩নম্বর ওয়ার্ডের দুই সদস্য প্রার্থীর মধ্যে ভোট চাওয়া কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দুই ইউপি সদস্য প্রার্থী পান্নু মোল্লা ও আইয়ুব আলীসহ তিন কর্মীকে আটক করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
দুটি ইউনিয়নের ১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে দৌলতদিয়ায় ৭টি এবং দেবগ্রামের ৬টি কেন্দ্র সরেজমিন ঘুরে দেখেন এ প্রতিবেদক। এ সময় প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা মানুষের ভিড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। প্রতিটি কেন্দ্রে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের কয়েকশ গজ দূর থেকে চারদিকে পোষ্টার আর মানুষের ভিড় সামলে পৌছতে হয় কেন্দ্রে।
দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা কাজী মোনাক্কা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আসা বৃদ্ধা রহিমন নেছা বেগম বলেন, বাপুরে অনেক দিন পর ভোট দিমু। ভোট দিওনের কথা শুইনা ছেলে বৌকে সাথে করে সাত সহালে চইলা আইছি। তাঁর মতো অধিকাংশ নারীরা ভোট দিতে আসায় কেন্দ্রের মাঠ ভরে যায়। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা চন্দন মিত্র বলেন, সকাল থেকে পুরুষের তুলনায় দ্বিগুনের বেশি নারী ভোটার উপস্থিত হন। দেবগ্রামের আরো ৫টি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় একই ধরনের চিত্র।
দৌলতদিয়া ইউপির যদু মাতবর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায় মানুষে ঠাসাঠাসি দাড়ানোর জায়গা নেই। ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এখানকার ভোটার গোয়ালন্দ শহরের কলেজ পাড়ায় বাস করেন নুরুল ইসলাম দম্পতি। তাঁরা সাত সকালেই কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন। ভিড়ের মধ্যে ভোটারের লাইনে দাড়াতে হিমশিম খেতে হয়।
তারা বলেন, অনেক দিন পর ভোট, তাই সবার মনে আনন্দ। চারদিকে মানুষের আনাগোনা দেখে মনে হচ্ছে ঈদের খুশি লেগেছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পরিবারসহ খুব সকালেই গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছি।
এই ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এস.আই মেসবাহ উদ্দিন ও এ.এস.আই শহিদুল ইসলাম বলেন, সকাল নয়টার বাজার অনেক আগেই নারী-পুরুষের ভিড় পড়ে যায়। এত মানুষের চাপ সামাল দিতে এবং বুথ কক্ষের সামনে লাইনে দাঁড় করাতে আমাদের চরম বেগ পোহাতে হয়।
নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়কারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, শতভাগ সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবং নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোথাও কোন প্রকার অপ্রীতিকর খবর পাওয়া যায়নি। নির্বাচনী এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছে।