॥রঘুনন্দন সিকদার॥ সরকারীকরণ হওয়ার পর ১বছর পার হলেও বালিয়াকান্দি কলেজের শিক্ষার্থীরা সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
১৯৬৭ সালে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী কলেজটিকে ২০১৮ সালের ২৫শে আগস্ট জাতীয়করণ করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও নীতিমালার অভাবে কলেজটির ২হাজারেরও বেশী শিক্ষার্থী কোন সরকারী সুবিধা পাচ্ছে না।
কলেজটিতে রয়েছে ব্যবস্থাপনা, সমাজ বিজ্ঞান,রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও ভূগোলের মতো ৪টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনার্স অধ্যয়নের সুযোগ। কিন্তু ২হাজার শিক্ষার্থীর অধ্যয়নের জন্য ক্লাস রুম আছে মাত্র ১২টি। সম্প্রতি কলেজের একটি ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় সৃষ্টি হয়েছে এমন সংকটের। এর ফলে সময়মতো সব বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এর পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষক সংকট। সকল বিষয়ের জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে হিমসিম খেতে হচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষকে। কর্মচারীদেরও ঘাটতি রয়েছে। এ জন্য চুক্তিভিত্তিক ৩জন অফিস কর্মচারীকে দিয়ে চালাতে হচ্ছে অফিসিয়াল কার্যক্রম।
অপরদিকে কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম মোস্তফা ২০১৮ সালের ১৩ই আগস্ট অবসরে যাওয়ার পর নতুন কোন অধ্যক্ষ পায়নি কলেজটি। ফলে কলেজের কার্যক্রমেরও অগ্রগতি হয়নি। ১বছরের বেশী সময় ধরে কলেজের কার্যক্রম চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দ্বারা। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। যার জন্য তিনি তার বিভাগের ক্লাস নিতে পারছেন না।
কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র সুজন মিত্র বলেন, শিক্ষক স্বল্পতার জন্য আমরা সময়মতো ক্লাস করতে পারি না। একজন শিক্ষক দুই বা তার অধিক ক্লাস নিতে বাধ্য হন। সরকারী কলেজ হওয়া সত্ত্বেও রেজিস্ট্রেশন ফি, ফরম ফিলাপ, পরীক্ষার ফি দিতে হয় অনেক, যা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের ছাত্রী মারিয়া সুলতানা মীম আক্ষেপ করে বলেন, অনেক আশা নিয়ে অন্য কলেজে ভর্তি না হয়ে এই কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু সরকারী নীতিমালা না আসায় জাতীয়করণের কোন সুযোগ-সুবিধাই আমরা পাচ্ছি না। আমার মতো সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের দাবী, অনতিবিলম্বে কলেজটি সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী চলুক এবং নতুন অধ্যক্ষ আসুক, যাতে কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অমরেশ চন্দ্র রায় বলেন, দীর্ঘ ১বছরের বেশী সময় পার হলেও আমরা এখনও সরকারী নীতিমালা পাইনি। যার কারণে কলেজের বিভিন্ন সমস্যা সত্ত্বেও আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। পরিসংখ্যান, ইসলামের ইতিহাসসহ বেশ কিছ বিষয়ে ক্লাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতাও এখন আমাদের নেই। যার জন্য শিক্ষক সংকট নিয়েই আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। আবার একটি ভবন পরিত্যক্ত হওয়ায় ক্লাস রুমের সংকটে আছি। ২হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে ক্লাস রুম রয়েছে মাত্র ১২টি। এতে সময়মতো ক্লাস নেওয়ায়ও ব্যাঘাত ঘটছে।