Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

গোয়ালন্দে পল্লী বিদ্যুতের লাইন ঠিক রাখতে মেহগনি গাছের মাথা কর্তন

॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার ওপর দিয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ঠিক রাখতে শতাধিক মেহগনি গাছের মাথা কেটে ফেলা হয়েছে। এতে জমির মালিকের অর্ধ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবী করেছেন।
ওই জমির মালিক বাহাদুরপুর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদ সরদারের। তার দুই ছেলে মঈনদ্দিন সরদার ও জাহিদ সরদার দেখভাল করেন। মঈনদ্দিন সরদার বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকে চাকুরীর সুবাদে থাকেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায়। আর জাহিদ সরদার একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর সুবাদে থাকেন নোয়াখালী। গাছ কেটে ফেলার খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন মঈনদ্দিন সরদার। গত শুক্রবার বাগানে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখে নিজেই হতবিহবল হয়ে পড়েন। এলাকাবাসী থেকে জানতে পারেন পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন তারের লাইন ঠিক রাখতে প্রায় দেড়শ গাছের মাথা কেটে ফেলেছে।
গতকাল শনিবার দেখা যায়, গোয়ালন্দ বাজার থেকে বাহাদুরপুর হয়ে ফরিদপুরের আঞ্চলিক সড়কের বাহাদুরপুর এলাকায় রাস্তার পূর্ব পাশে এই মেহগনি বাগান। বাগানের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন। বাগান পার হয়ে মরা পদ্মা নদীর উপর দিয়ে পূর্ব উজানচর গেছে লাইনটি।
স্থানীয় আফছার শেখসহ কয়েকজন জানান, গত ৪দিন আগে খুব সকালে পল্লী বিদ্যুতের কয়েকজন শ্রমিক বড় লাঠির মাথায় ধারালো স্যান বেধে মেহগনি গাছের মাথা কেটে ফেলে। দুপুরের আগেই দুটি লাইনের গাছের মাথা কেটে ফেলে বিদ্যুতের লোকজন চলে যায়। পরে তাদের বাড়িতে সংবাদ দেয়া হয়। সংবাদ পেয়ে তাদের বৃদ্ধা মা বাগানে এসে কান্নাকাটি করতে থাকে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভ্যানে করে গাছের কাটা মাথা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।
মঈনদ্দিন সরদার অভিযোগ করে করেন, চার বছর আগে প্রায় তিন বিঘা জমিতে মেহগনির বাগান করেন। ওই বছর স্থানীয় একটি পরিবার দ্বারা কিছু ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে ফের আরো প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ করে বাগানে গাছ রোপন করা হয়। বর্তমানে ওই সব গাছ বড় হয়ে গেছে। একেকটি গাছ প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট করে লম্বা হয়েছে। বাগানের বড় অংশ রয়েছে রাস্তার পশ্চিম ভাগে। রাস্তার পূর্ব ভাগে প্রায় ৩০ শতাংশ জায়গার ওপর এই বাগান। গত বছর পল্লী বিদ্যুতের লোকজন ওই বাগানের এক পাশ দিয়ে তাড় টানিয়ে নদী পাড়ি দিয়ে পূর্ব উজানচর নেয়ার কথা জানালে ভবিষ্যতে ক্ষতির আশঙ্কায় বাধা দিয়েছিলাম। এমনকি পল্লী বিদ্যুতের রাজবাড়ীর জি.এম এর কাছে আবেদনও করেছিলাম। তারা কিছুদিন কাজ বন্ধ রেখে ফের কোন ক্ষতি হবে না বলে তাড় টানা শুরু করে। ৩/৪ দিন আগে তাড়ের সাথে গাছের ডালপাল লেগে আছে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় পল্লী বিদ্যুতের লোকজন বাগানের প্রায় দেড়শ গাছের মাথা সম্পূর্ণ কেটে ফেলে দেয়। এ জন্য তিনি ক্ষতিপূূরণ দাবী করে অবিলম্বে ওই স্থান থেকে বিদ্যুতের লাইন সরিয়ে অন্যত্র দিয়ে নেওয়ার দাবী জানান।
এ প্রসঙ্গে রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার মোঃ কামরুল ইসলাম গোলদার বলেন, বিষয়টি আমি জানি। লাইন নিতে হলে তো গাছের ডালপালা বা মাথা কাটা পড়বেই। আমাদের নিয়োজিত ঠিকাদার গত বছর লাইন টেনে চলে গেছেন আরেক ডিভিশনে। যখন লাইন টানে তখন জমির মালিক কোথায় ছিলেন? তখন একটি বার তো বললো না আমার এই সমস্যা। আর গাছের ডাল ও মাথা না কাটলে বিদ্যুতের লাইন যাবে কি করে।