॥শিহাবুর রহমান॥ যুবলীগ নেতা পান্নু মিয়ার ব্যক্তিগত অর্থে তৈরী বাঁশের সেতুতে দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ৭টি গ্রামের প্রায় ১০হাজার মানুষের। পান্নু মিয়ার এমন মানবতায় হাঁসি ফুটেছে তাদের।
আগে যেখানে এ অঞ্চলের মানুষ বাড়ী থেকে বের হয়ে স্কুল কলেজ, কোর্ট কাচারী, অফিস আদালত ও হাট বাজারে যাওয়ার জন্য নৌকায় নদী পাড় হতে হতো। এছাড়াও অনেক সময় নৌকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা লাগতো দীর্ঘক্ষণ। এখন সেখানে দিয়ে মানুষসহ চলাচল করছে রিক্সা-ভ্যান, বাইসাইকেল ও মোটর সাইকেল।
১নং বেপাড়ী পাড়া, শাহ বেপাড়ী পাড়া, লালু মন্ডল পাড়া, ধল্লাপাড়া, নতুন পাড়া, মালো ফকির পাড়া, নাসির সরদার পাড়া, আবুল ডাক্তার পাড়া, জয়দার চৌধুরী পাড়া ও ইদ্রিস পাড়া নিয়ে গঠিত দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড। এর মধ্যে ৭টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল ইদ্রিস পাড়া অভিমুখী মরাপদ্মার উপর দিয়ে ইটের এই রাস্তাটি। ওই রাস্তা দিয়ে মানুষ হাট, বাজার, স্কুল কলেজসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতো। গত বছর বন্যায় রাস্তাটির মরাপদ্মার ওই অংশ বিলীন হয়ে গেলে এসব অঞ্চলের মানুষ নৌকা দিয়ে পাড়াপাড় হতো। এতে মানুষের অনেক কষ্ট পোহাতে হতো। বিশেষ করে স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরা আরো বেশি সমস্যায় পড়তো। প্রায় দীর্ঘ এক বছর ধরে এসব গ্রামের মানুষ কষ্ট শিকার করে চলাফেরা করে আসলেও এগিয়ে আসেনি কেউ।
বিষয়টি দৌলতদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পান্নু মিয়ার দৃষ্টি গোচর হলে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে মানুষের পাড়াপাড়ের জন্য বাঁশের সেতু তৈরী করার সিদ্ধান্ত নেন এবং দেড় লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাঁশের সেতুটি তৈরী করে দেন।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পান্নু মিয়া জানান, এক বছর আগে রাস্তাটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। বিলীন হওয়ার পরে মানুষের চলাচল খুব কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্কুলের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। তাদেরকে অনেক সময় নৌকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এই দেখে আমি চিন্তা করি যদি এখানে একটি বাঁশের সেতু করা যায় তাহলে স্কুলের ছেলে মেয়েদের যাতায়াতে এতো কষ্ট করতে হবে না। এমন চিন্তাতেই আমি আমার ব্যক্তিগত অর্থে বাঁশের সেতুটি তৈরী করে দিই। এরপর থেকে স্কুলের ছেলে মেয়েরা এই সেতুর উপর দিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করছে। কৃষকরা তাদের কৃষিপন্য ভ্যানযোগে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারছে।
স্থানীয়রা জানান, এই বাঁশের সেতু তৈরী করার আগে তাদেরকে অনেক কষ্ট শিকার করা লাগতো। এখন সেই কষ্ট লাঘব হয়েছে। ছেলে-মেয়েরাও এখন নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে। বাঁশের সেতুতে সাময়িকভাবে আমাদের কষ্ট ও দূর্ভোগ লাঘব হলেও স্থায়ীভাবে এখানে একটি পাকা ব্রীজ প্রয়োজন।
দৌলতদিয়ায় পান্নু মিয়ার তৈরী বাঁশের সেতুতে সাতটি গ্রামের মানুষ উপকৃত
