Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

বহরপুর বারুগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা নানা সমস্যায় জর্জরিত॥অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে উঠছে শিশুরা

দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বারুগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে সেখানে আশ্রিত ৬১টি পরিবারের দুই শতাধিক মানুষ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে উঠছে সেখানকার শিশুরা।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার ২০০৮ সালে ৮ একর ৩২ শতাংশ খাস জমির উপর বারুগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নির্মাণ করে। ১৮০টি পরিবারের থাকার জন্য ১৮টি ব্যারাক তৈরী করা হয়। প্রতিটি ব্যারাকের জন্য ২টি করে টয়লেট ও নলকূপের ব্যবস্থা করা হয়। শুরুর দিকে সেখানে ১৮০টি পরিবার থাকলেও এখন রয়েছে মাত্র ৬১টি পরিবার। নানা সমস্যার কারণে ১১৯টি পরিবার আশ্রয়ণ ছেড়ে চলে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয়ণের মধ্যকার ছোট রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পায়ে হাটা কষ্টকর হয়ে পড়ে। নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা। টয়লেটের সবগুলোই নষ্ট। মাত্র ৬টি টিউবওয়েল ছাড়া বাকীগুলো নষ্ট। যারা বসবাস করছে তাদের ঘরগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। নেই কোন বেষ্টনী। আশ্রয়ণটি খোলা মাঠের মধ্যে হওয়ায় সেখানে দিন-রাত বহিরাগত লোকজন অবাধে যাতায়াত করে। এর ফলে রাতে বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।
আশ্রয়ণের বাসিন্দারা জানান, তারা সেখানে ১১বছর ধরে বাস করছেন। বিদায়ী ইউএনও মাসুম রেজা তাদের নিয়ে গঠিত সমিতি এবং পুকুর থেকে দেড় বছরে ১৮ হাজার টাকা করে দিয়েছিলেন। তার পূর্বে বিগত ৮ বছরে সমিতি ও পুকুর থেকে তারা ৮ হাজার টাকা করে পেয়েছিলেন। তাদের দাবী, আশ্রয়ণের বড় পুকুরটি যদি তাদের নিয়ন্ত্রণে দিত তাহলে তারা নিজেদের মতো মাছ চাষ করে অনেক টাকার মালিক হতে পারতেন।
বারুগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্প সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল আজিজ মোল্লা বলেন, আশ্রয়ণে কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা সমস্যাগুলোর কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা বলেছেন খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান করা হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজরদারী রয়েছে। আমরা বারুগ্রাম আশ্রয়ণের উন্নয়নের জন্য ৭৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ৬৪৮ টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা তৈরী করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছি। অর্থ বরাদ্দ পেলেই দ্রত আশ্রয়ণের সকল সমস্যা দূর করা হবে।