॥রফিকুল ইসলাম/মাহফুজুর রহমান॥ ঢাকাস্থ খানখানাপুর সমিতির উদ্যোগে গুণীজন ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল ১৪ই আগস্ট সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
খানখানাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ শামসুল হক, বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষাবিদ ও সমাজ সেবক শেখ আব্দুস সামাদ, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক শহীদুজ্জামান খান, ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন সার্ভিসেস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান খান, সাবেক সংসদ সদস্য মুন্সি আব্দুল লতিফ, এডঃ আলহাজ্ব মোঃ নূরুল ইসলাম, এডঃ মোঃ আসলাম মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু বকর, বাংলাদেশ সোলার এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী ডি.এম মজিবর রহমান, খানখানাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমির আলী মোল্লা, সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুদ্দিন বিশ্বাস, খানখানাপুর তমিজউদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিউল্লাহ্, অন্যান্যের মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রকিবুল হাসান পিয়াল, ঢাকাস্থ খানখানাপুর সমিতির আহ্বায়ক গাজী আশরাফুল বারী মুকুল ও সদস্য সচিব মোঃ সাইদুর রহমান টিপু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ইসলাম তাসনিম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য মানুষ হওয়া-মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো। আমাদের সেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। মেধাই আমাদের সব থেকে বড় সম্পদ। শিক্ষিত হয়ে সততা নিয়ে দায়িত্ব পালন না করলে তার কোন মূল্য নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চলে যিনি প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার প্রতি সম্মান জানাই। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে পাওয়ার হাউজ, যা মানুষের মনের অন্ধকার ঘরকে আলোকিত করে। ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা সম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষের ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে শোকাবহ ১৫ই আগস্টের কালো রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যসহ সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন সংবেদনশীল একজন মানুষ। সবাইকে খুব ভালোবাসতেন, বিশ্বাস করতেন। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কখনো ভাবতেন না। তিনি মনে করতেন, যে বাঙালীর জন্য তিনি আজীবন কষ্ট করেছেন সেই বাঙালী তার কোন ক্ষতি করবে না। সে কারণেই ’৭৫-এর ১৫ই আগস্টের কালো রাতে ঘাতকরা সপরিবারে তাকে হত্যার সুযোগ পেয়েছিল। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
আলোচনা পর্বের শেষে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিগণ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত খানখানাপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধশত ছাত্র-ছাত্রী এবং সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউটের ৭জন প্রাক্তন শিক্ষক ও ১০জন মরহুম শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের হাতে মরণোত্তর সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী ইসরাত জাহান তন্নি তার নির্মিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য তমিজুদ্দিন খান উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের স্থাপন করার জন্য প্রধান অতিথির হাত দিয়ে হস্তান্তর করেন।
সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ শামসুল হকের পতœী মিসেস আরিফা হক, ছেলে শামসুল আশেকিন আসিফসহ ঢাকাস্থ খানখানাপুর সমিতির সদস্যগণ, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত খানখানাপুরের ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় সুধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাস্থ খানখানাপুর সমিতি’র উদ্যোগে গুণীজন ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান
