Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখি মানুষের উপচে পড়া ভিড়॥ঢাকাগামী গাড়ির চাপ কমেছে

॥মইনুল হক মৃধা॥ পরিবারের সাথে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। গতকাল ৯ই আগস্ট শুক্রবার রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ঘাটে ঈদে ঘরমুখি মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষ্যনীয়।
নদী উত্তাল ও ¯্রােত থাকায় অধিকাংশ মানুষ লঞ্চের পরিবর্তে ফেরীতে নদী পাড়ি দিচ্ছে। ঢাকাগামী যাত্রীবাহি বাস ও পশুবাহী গাড়ির কোন চাপ নেই। তবে রাজধানী ছেড়ে আসা কাটা লাইনের যাত্রীদের নিতে খালি বাসের দীর্ঘ সারি ছিল।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে লঞ্চে স্বাভাবিকভাবে মানুষ আসছে। তবে লঞ্চের পরিবর্তে ফেরীেত মানুষের ভিড় সবচেয়ে বেশি। প্রায় অধিকাংশ বড় ফেরীতে অসংখ্য ছোট গাড়ি, মোটর সাইকেল ও মানুষে ঠাসা ছিল। বিপরীত দিকে টার্মিনাল থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা শুধু খালি বাসের সারি ছিল। নদী পাড়ি দিয়ে আসা যাত্রীদের নিতে তারা দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করছে। তবে সারা দিনে মাত্র একটি ট্রিপ ভাগ্যে জুটছে বলে চালকরা জানায়।
মাগুরা থেকে আসা একটি বাসের চালক রেজাউল করিম বলেন, মালিক ঈদ উপলক্ষে দৌলতদিয়া ঘাটে পাঠিয়েছে। দুই দিন ধরে ট্রিপ মারা শুরু করেছি। নদী পাড়ি দিয়ে আসা দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে নিতে এসেছি। দৌলতদিয়া থেকে জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে ভাড়া আদায় করছি। তবে সারা দিনে সিরিয়াল অনুযায়ী মাত্র একটি করে ট্রিপ মারতে পারছি। এতে করে পোষায় না। গত বৃহস্পতিবার সারাদিন একটি ট্রিপ পেয়ে আসি। আজ প্রায় ৮ঘন্টা ধরে সিরিয়ালে অপেক্ষায় আছি।
কুষ্টিয়া থেকে আরেক বাস চালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঈদের সময় ভাল ব্যবসার জন্য এসেছিলাম। তবে আমরা দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া নিয়মিত যাত্রী বহন করি। কিন্তু যে বাস নিয়মিত চলাচল করে তার পরিবর্তে এসেছি। এসে খুব বেশি একটা লাভ হয়নি। আমার মতো কয়েকশ বাস লাইনে দাড়িয়ে রয়েছে।
এদিকে ঢাকা থেকে আসা ফেরীতে নদী পাড়ি দিয়ে ফেরী ঘাটে অপেক্ষা করছেন তিন পোষাক কারখানার শ্রমিক। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলা শহরে। তাদের একজন মিরাজ হোসেন বলেন, কাটা গাড়িতে ভেঙ্গে পাটুরিয়ায় এসেছি। পরে ফেরীতে নদী পাড়ি দিয়ে এখন গাড়ির জন্য চিন্তা করছি কিভাবে যাব? পাটুরিয়া পর্যন্ত জনপ্রতি প্রায় ৩০০ টাকা করে ভাড়া লেগেছে। এখন দৌলতদিয়া থেকে কত লাগবে ভাবছি। তবে যেতে তো হবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি বলেন, ঢাকাগামী পশুবাহি গাড়ি বা যাত্রীবাহি বাসের চাপ নেই বললেই চলে। যেসব গাড়ি আসছে তা সরাসরি গিয়ে ফেরিতে উঠছে। তবে নধী পাড়ি দিয়ে আসা যাত্রী নিতে অনেক খালি বাস লাইন দিয়ে আছে। এছাড়া ঢাকাগামী যানবাহনের চাপ না থাকায় পাটুরিয়া থেকে গাড়ি বোঝাই ফেরীগুলো দৌলতদিয়া এসে গাড়ি আনলোডের পর দুই-চারটি যা পাচ্ছে তাই নিয়েই পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ফেরী দৌলতদিয়া থেকে অর্ধেক লোড নিয়ে বা কখন দুই-তিনটি গাড়ি নিয়েই ছেড়ে যাচ্ছে।