॥গোয়ালন্দ প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের শ্রীদাম দত্ত পাড়ার কুন্ডু বাড়ির পুকুর পাড়ের একটি ছোট মেহগণি গাছ তলা থেকে মজনু সরদার(৪০) নামের এক জাহাজ বাবুর্চির অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছে।
সে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার নবগ্রাম গ্রামের মৃত খৈমদ্দিন সরদারের ছেলে। তিনি খুলনার মংলার একটি জাহাজে বাবুর্চির কাজ করতো। গত বুধবার রাতে সে মংলা থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসছিল।
গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুন্ডু বাড়ির লোকজন বাড়ির পশ্চিম পাশের পুকুর পাড়ে একটি ছোট্ট মেহগনি গাছের সাথে হাঁটু গেড়ে বসে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গলায় গামছা পেচানো দেখতে পান। তারা দ্রুত বিষয়টি গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ বেলা দশটার দিকে ওই বাড়ির পুকুর পাড়ের গাছতলা থেকে হাঁটু গেড়ে বসে থাকা গলায় গামছা দিয়ে গাছের সাথে পেচানো অবস্থায় ওই লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় তার পড়নে লুঙ্গি, শার্ট ছিল এবং পকেটে একটি মুঠোফোন ছিল। পাশে এক জোড়া সেন্ডেল পড়ে থাকতে দেখে। পড়ে ফোনে ডায়ালের নাম্বার থেকে পুলিশ ফিরতি কল দিলে পরিবারের লোকজন ধরে। তখন পরিচয় নিশ্চিত হলে তাদেরকে আসতে বলেন। খবর পেয়ে বেলা এগারটার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ছুটে আসেন নিহত মজনু সরদারের বড় ছেলে মোঃ রবিউল ইসলাম স¤্রাট ও মজনুর বড় ভাই মোঃ গফুর সরদার। তারা এসেই লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মজনুর ছেলে রবিউল ইসলাম স¤্রাট জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে আমি বাবাকে ফোন করলে বুধবার রাতে বাড়ি ফিরে আসবে বলে জানায়। এও বলেছিল, তোমরা কেউ মন খারাপ করোনা। আমি বাড়ি এসেই সবার জন্য ঈদের কেনাকাটা করবো। ওই ছিল বাবার সাথে আমার শেষ কথা। পরদিন বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে মায়ের ফোনে বাবা ফোন করে জানায়, আমি গোয়ালন্দ ঘাটে যানজটে আটকা আছি। এরপর সকাল হলেও সে বাড়ি ফিরে না আসায় আমরা বার বার বাবার ফোনে ফোন করতে থাকি। রিং বাজে কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। এ নিয়ে আমরা সবাই দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। পড়ে বেলা দশটার দিকে থানা থেকে ফোন দিলে জানতে পারি।
মজনুর বড় ভাই গফুর সরদার বলেন, মজনু আগে পাটুরিয়া ফেরী ঘাট এলাকায় হোটেল করতো। ব্যবসা ভালো না হওয়ায় কিছুদিন বেকার থাকার পর কয়েক মাস আগে মংলায় একটি জাহাজে বাবুর্চির কাজ পায়। গত বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে মধ্যরাতে যানজটে আটকে থাকার কথা জানায়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। যে অবস্থায় তাকে পাওয়া যায় এভাবে আত্মহত্যা করতে পারে না। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ জানাযাবে।
গোয়ালন্দে জাহাজ বাবুর্চির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার॥ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে
