॥বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মাশালিয়া বাজার এলাকার কাঠ মিস্ত্রীরা বর্তমানে নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গতকাল ১লা আগস্ট সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বট-পাকুর গাছের ছায়ায় কাঠ মিস্ত্রীরা নৌকা তৈরীর কাজে ব্যস্ত রয়েছে। জিকা, বাবলা, মেহগনীসহ বিভিন্ন গাছের কাঠ প্রয়োজন অনুযায়ী স’মিলে চিড়াই করে রোদে শুকিয়ে পেরেক ও লোহা দিয়ে ঐতিহ্যবাহী এসব নৌকা তৈরী করা হচ্ছে।
মাশালিয়া গ্রামের কাঠ মিস্ত্রী কুমারেশ রায় জানান, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে মাশালিয়া বাজারে ছোট-বড় নানা ধরণের নৌকা তৈরীর কাজ করে আসছেন। বর্ষা মৌসুমে তাদের ব্যস্ততা অনেক বেড়ে যায়। রাজবাড়ী, মাগুরা, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জায়গার লোকজন এখান থেকে শুধু কাঠ ও কাঠ-প্লেনশীট দিয়ে ৯ হাত থেকে ২০ হাত পর্যন্ত নৌকা ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে।
একই গ্রামের কাঠ মিস্ত্রী অমল রায় বলেন, বর্ষা মৌসুমে নদী-নালা, খাল-বিলের পানিতে মাছ ধরা ও যাতায়াতের জন্য নৌকা ব্যবহার বেশী হয়ে থাকে। তাই বর্ষার পানি আসার উপরই নির্ভর করে আমাদের নৌকা তৈরীর কাজ ও ক্রয়-বিক্রয়। আমরা প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে অর্ডার থেকে শুরু করে রেডিমেড নৌকা তৈরী করে ক্রেতাদের নিকট বিক্রি করে থাকি।
বাকশাডাঙ্গী গ্রামের কাঠ মিস্ত্রী খোরশেদ মোল্লা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে তার নিজ বাড়ীতে ও মাশালিয়া বাজারে নৌকা তৈরীর কারিগরদের নিয়ে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরণের নৌকা তৈরীর কাজ করে আসছেন। বিভিন্ন এলাকার লোকজন এসে নৌকা ক্রয় করে নিয়ে যায়। এখানে দুই ধরণের নৌকা তৈরী হয়। একটি শুধু কাঠ দিয়ে এবং অপরটি কাঠ ও প্লেনশীট দিয়ে তৈরী হয়। এ বছর নৌকা তৈরী করে তিনি ভালো টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
কালুখালী উপজেলার মৃগী গ্রামের কাঠ মিস্ত্রী কামরুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুম আসার সাথে সাথে তারা মাশালিয়া বাজারে এসে নৌকার কারখানার মালিকদের সাথে প্রতি হাত ৩৫০ টাকা করে মিটিয়ে নৌকা তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরী করে ভালো অর্থ আয় করে বাড়ী ফিরতে পারবেন বলে আশা করছেন।
বালিয়াকান্দির মাশালিয়ায় নৌকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঠ মিস্ত্রীরা
