Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী জেলার বন্যায় ৪টি উপজেলায় সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী॥দুর্ভোগে কয়েক হাজার মানুষ

হেলাল মাহমুদ॥ পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় রাজবাড়ী জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ইতিমধ্যে ৪টি উপজেলার (সদর, গোয়ালন্দ, কালুখালী, পাংশা) সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
বন্যার পানি দ্রুত গতিতে চরাঞ্চলসহ নিম্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের নয়নসুখ এবং গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের অন্তারমোড়, চরবরাট, দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাউয়ালজানী, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ছাত্তার মেম্বারের পাড়া, পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের গতমপুর, চররামনগর, শাহমীরপুর, চরআফড়া এবং কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের হরিণবাড়ীয়াসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পতিত হয়েছে এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টের গেজ রিডার ইদ্রিস আলী জানান, ‘গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর পানি আরও ২০ সেঃ মিঃ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল ২০শে জুলাই সকাল ৬টায় ওই পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৬ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে এবং পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অসহায় মানুষ তাদের বাড়ী-ঘর ছেড়ে মালামাল ও গবাদীপশু নিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে যাচ্ছে। ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। অনেক জায়গায় দেখা গেছে, কৃষকরা মাজা সমান পানিতে দাঁড়িয়ে পাট কাটছে।
পানিবন্দী চরবরাট গ্রামের গৃহবধূ নূরজাহান বেগম বলেন, ৪দিন ধরে পানি উঠলেও কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি। রান্না করায় খুব সমস্যা হচ্ছে। খেয়ে-না খেয়ে কোন রকমে আমাদের দিন কাটছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গবাদীপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
কাউয়ালজানী গ্রামের বাসিন্দা জিকরুল শেখ বলেন, সকাল ৯টায় নৌকায় করে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাই-বেলা ১২টার সময় নিয়ে আসি। আবার বেলা ১২টার সময় ছেলেকে স্কুলে দিয়ে আসি-বিকাল ৪টার সময় নিয়ে আসি। ছেলে-মেয়েদের নৌকায় আনা-নেওয়া করতে করতেই আমার সময় চলে যায়।
অন্তারমোড় এলাকার আছিরন নেছা বলেন, বাড়ীতে পানি ঢোকায় গবাদীপশু নিয়ে বেড়ীবাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বাররা এই দুরবস্থায় কোন খোঁজ নেয়নি।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান জানান, ইতিমধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত ২০৬টি পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে প্রাপ্ত ৭টি আইটেমের ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। অন্যান্য উপজেলাতে ইউএনওদের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, সেই তালিকা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।