Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীতে দায়িত্ব পালনকালে মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি—বিদায়ী পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি

॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ীর বিদায়ী পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বিপিএম,পিপিএম-সেবা বলেছেন, জনগণের কল্যাণের জন্যই পুলিশের সকল ইউনিটের সৃষ্টি করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের আয়োজনে গতকাল ১৩ই জুলাই দুপুরে পুলিশ লাইন্সের ড্রিলশেডে পুলিশ সুপারের বদলী জনিত বিদায় উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন, রাজবাড়ীতে এক বছর চার মাস দায়িত্ব পালনকালে মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। পুলিশের মনোবল বৃদ্ধির জন্য সব পুলিশকে একটি ইউনিট হিসেবে নিয়ে রাজবাড়ীবাসীকে সেবা প্রদান করেছি। রাজবাড়ী আসার পর পুলিশের নানা সীমাবদ্ধতা দেখেছি। সেগুলো চিহ্নিত করে পুলিশের সেবার মান বৃদ্ধি করেছি। পুলিশ ব্যারাক সংস্কার, পুলিশের অস্ত্রাগারের সীমানা প্রাচীর, স্যালুটিং ডায়াস নির্মাণ, রাজবাড়ী থানার নতুন ভবন নির্মাণ, সদর পুলিশ ফাঁড়ি ও বালিয়াকান্দি থানায় উন্নয়নসহ বিভিন্ন কাজ করেছি। রাজবাড়ীতে যোগদানের পরে জাতীয় নির্বাচনটা ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যেটা সফলভাবে পার করেতে পেরেছি। এছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনগুলোও ছিল পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। জেলা পুলিশের সকল সদস্যকে সাথে নিয়ে সেগুলো সফলভাবে শেষ করেছি।
তিনি আরও বলেন, রাজবাড়ীর যে পুলিশ সদস্য যখন আমার কাছে যে দাবী বা কাজ নিয়ে এসেছে সেগুলোর সমাধান করার চেষ্টা করেছি। কাজ করতে গেলে সমালোচনা থাকবেই। হয়তো আমারও কিছু সমালোচনা ছিল, সেগুলোকে শুধরে নিয়ে আগামীতে পথ চলবো।
রাজবাড়ীর জেলা পুলিশসহ ট্রাফিক পুলিশের ৪জন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার বদলীর ব্যাপারে তিনি বলেন, আপনাদের সহায়তা নিয়ে রাজবাড়ীর গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করেছি। বিশেষ করে ডিবির অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ কামাল হোসেন ভূইয়া, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোঃ মাহবুব তালুকদার, জেলা বিশেষ শাখার ইন্সপেক্টর মোঃ আলমগীর হোসেন, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নাজমুল হুদা সকলেই স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে যোগ্যতার প্রমাণ বহন করেছে-তাদেরকেই বদলী হতে হচ্ছে।
পুলিশ সুপার বলেন, রাজবাড়ী শহর একটি সবুজের শহর। আমার নির্মাণ কাজেও আমি সংমিশ্রণ করে লাল-সবুজ ফুটিয়ে তুলে নির্মাণ কাজ করেছি। রাজবাড়ীতে বিভিন্ন সময়ে যে সকল হত্যাকান্ড ঘটেছে সে সকল হত্যাকান্ডের তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমার কর্মক্ষেত্রের সব জায়গায় নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। পুলিশ সদস্যদের মধ্য থেকে পুলিশ সদস্যদের সমালোচনা করা বা অকল্যাণ চাওয়া ঠিক নয়।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার হিসেবে যিনি আসছেন তিনিও একজন দক্ষ পুলিশ অফিসার। একটা ইউনিটের দায়িত্ব পালন করতে গেলে কাউকে না কাউকে কাছে টেনে নিতে হয়। হয়তো অনেকের ক্ষেত্রে সেটা হয়েছে, এতে হয়তো অনেকেই মন খারাপ করেছেন। তবে তারা যোগ্যতার দিক দিয়ে এগিয়ে ছিলেন। আমার সময়কালে রাজবাড়ীতে সবচেয়ে কম সংখ্যক পুলিশ সদস্যের শাস্তি হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার্স) মোঃ ফজলুল করিমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) মোঃ সালাহ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোহাম্মদ রেজাউল করিম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(পাংশা সার্কেল) মোঃ লাবীব আব্দুল্লাহ, রাজবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার, পাংশা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আহসান উল্লাহ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আবুল হোসেন গাজী, এস.আই হাফিজুর রহমান, এএসআই আবুল হোসেন, সোহেল রানা, কনস্টেবল দীপা রাণী মল্লিক, এনামুল হক, পুলিশ লাইন্সের স্টাফ আজাদ হোসেন, ডিবিসি নিউজ টেলিভিশনের প্রতিনিধি দেবাশীষ বিশ্বাস, কালের কণ্ঠ ও একুশে টেলিভিশনের প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিদায়ী পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলিকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ফুলেল ও সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বিপিএম, পিপিএম-সেবা আজ ১৪ই জুলাই নতুন কর্মস্থল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদানের জন্য রাজবাড়ী ত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।