Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন করা হবে

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ৩রা জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় প্রস্তুতিমূলক সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে সভায় পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বিপিএম, পিপিএম-সেবা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস, রাজবাড়ী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিলীপ কুমার কর, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজম, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূরে সফুরা ফেরদৌস, রাজবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম গোলদার, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শেখ মোঃ আব্দুল হান্নান, সাবেক উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ফকরুজ্জামান মুকুট, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার ও খানখানাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লাল, জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা শাখার চেয়ারম্যান তানিয়া সুলতানা কংকন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহ্রাব, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার পাল, কালচারাল অফিসার পার্থ প্রতিম দাস, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সফি, বিটিভি’র প্রতিনিধি সানাউল্লাহ, সনাকের সভাপতি প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা এবং এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে.বি.এম সাদ্দাম হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমীন করিমীসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী-এনজিও প্রতিনিধিগণ এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, আগামী বছরের ১৭ই মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ পর্যন্ত সময়কে সরকার মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছে। আর সেই লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও অন্য যে কোন সময়ের যে কোন দিবসের চেয়ে বিশেষভাবে বর্ষব্যাপী সরকারী-বেসরকারী রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। যেহেতু বর্ষব্যাপী অনেক কর্মসূচী পালিত হবে সেহেতু সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক পূর্ব থেকেই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সমন্বিতভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। যাতে সকলের অংশগ্রহণে জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী অন্য যে কোন জেলার থেকে আরও বর্ণাঢ্যভাবে পালন করা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলার ন্যায় রাজবাড়ী জেলা একসময় বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত ছিল সেহেতু রাজবাড়ী জেলাতেও বঙ্গবন্ধুর পদচারণা ছিল। বিভিন্ন বক্তার বক্তব্য অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু অনেকবার রাজবাড়ী জেলায় এসেছেন এবং বাই সাইকেলে এখানকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেরিয়েছেন। তিনি রাজবাড়ীতে আসলে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে পিডব্লিউডির যে রেস্ট হাউজ সেখানে অবস্থান করেছেন। সে জন্য বঙ্গবন্ধুর এইসব স্মৃতিকে সংরক্ষণের জন্য সভায় বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। এইসব প্রস্তাব যাতে বাস্তবায়ন করা যায় সেই লক্ষ্যে সকলের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। মূলতঃ বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া আমরা কখনোই বাংলাদেশকে চিন্তা করতে পারি না। দেশপ্রেমিক প্রতিটি ব্যক্তির হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু রয়েছে। আমাদের সকলকে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন আমরা সঠিক রূপদানের মাধ্যমে তার আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে পারবো।
পুলিশ সুপার তার বক্তব্যে বলেন, জাতির জনক যার জন্য আমরা স্বাধীনতা ও একটি ভূখন্ড পেয়েছি সেই বিশ্ব নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। যদিও এখনো পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে এ সংক্রান্ত প্রোগ্রামের কোন দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়নি, তবে আশা করা যায় স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই নির্দেশনা পাওয়া যাবে। তার ভিত্তিতে জেলা পুলিশ জাতীয় সকল কর্মসূচীসহ জেলা পুলিশের কোন কর্মসূচী থাকলে সেটি জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে পালন করা হবে।
সভায় তিনি বলেন, আজকে কিছুক্ষণ আগে জেলা পুলিশের একজন দক্ষ ও ভালো কর্মকর্তা এস.আই হাশেম মাতব্বর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। তিনি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সকলকে তার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান।
অন্যান্য বক্তাগণ বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী কীভাবে সারা বাংলাদেশের অন্য জেলার থেকে ভিন্নধর্মী করার মাধ্যমে আরও বর্ণাঢ্য ও সুন্দরভাবে উদযাপন করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা ও বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এছাড়াও সভায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে জেলা পুলিশের এসআই মোঃ হাশেম মাতবর মারা যাওয়ায় তার রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোসহ সভায় উপস্থিত সকলকে সভার সভাপতি জেলা প্রশাসকের পক্ষ জানাযায় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়।