॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এনজিও ব্র্যাকের জেন্ডার অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচীর আয়োজনে গতকাল ১৪ই মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘নারী-পুরুষের সমতায় উন্নয়নের যাত্রা বদলে যাবে বিশ্ব, কর্মে নতুন মাত্রা’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যা বিষয়কে সামনে রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং বাল্য বিবাহ বন্ধে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নুরমহল আশরাফীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর আক্তার বিউটি এবং সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল বাসার মিয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা ব্র্যাক প্রতিনিধি মোঃ নেফাজ উদ্দিন।
প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের হেড অফিসের প্রকল্প কর্মকর্তা সুমাইয়া ফেরদৌস। এ সময় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শেখ মোঃ আব্দুল হান্নানসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারী বিভাগের কর্মকর্তাগণ, ব্র্যাকের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, স্বাস্থ্য কর্মী ও স্বাস্থ্য সেবিকাগণ এবং আয়েশা আবেদ ফাউন্ডেশনের কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক বলেন, রাজাবাড়ীতে আগের তুলনায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং বাল্য বিবাহ অনেকাংশে কমে গেছে। অধিক প্রচার প্রচারনায় সচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায় রাজবাড়ীবাসী মধ্যে বাল্য বিবাহের অভিশাপ সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা তৈরী হয়েছে। সরকারের নারী ও শিশু নির্যাতন আইন কঠোর হওয়া এবং কোন প্রকার ছাড় না দেওয়াসহ আইনের সঠিক প্রয়োগের কারণে আজ জেলায় নারী নির্যাতন অনেক কমে এসেছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যদি সকলে মিলে সকল সভা-সমাবেশ ও ওয়াজ মাহফিলে আরো বেশী করে এই সম্পর্কে কিছু বক্তব্য দেই তবে সেদিন আর বেশী দূরে নয়, যেদিন আমরা রাজবাড়ী জেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত করতে পারব। তিনি নারী নির্যাতন ছাড়াও তারা যে সমস্ত ক্ষেত্রে অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে সেই অধিকার আদায়ের জন্য নারী আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক জেলার সকল স্থানে নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নুরমহল আশরাফী বলেন, সারা বিশ্বে নারী জাগরণের ইতিহাস শত বছরের পুরনো। যা বর্তমান সময়েও চলমান। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা একজন নারী হওয়ায় তিনি নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতি খুবই আন্তরিক। সেই কারণে তিনি নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় নারীদের অধিকাংশ অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল(এমডিজি) বাস্তবায়ন করে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল(এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে দাঁড় করাতে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের সকলের উচিত তার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নে নিজেদের সম্পৃক্ত করা। এছাড়াও তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন, বাল্য বিবাহসহ নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং সদর উপজেলার যে কোন বাল্য বিবাহ ও নারী নির্যাতন বন্ধে তার সাথে সরাসরি যোগাযোগের আহবান জানান।