Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

উন্নত বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে মাদক থেকে ভয়াল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে হবে—জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ‘সুস্বাস্থ্যই সুবিচার, মাদকমুক্তির অঙ্গীকার’-শ্লোগানকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে গতকাল ২৬শে জুন সকালে বর্ণাঢ্য মানববন্ধন, র‌্যালী, আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।
এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় কালেক্টরেটের আম্রকাননে মানববন্ধনের পর একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
এরপর কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মাহফুজার রহমান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তানভীর আহম্মেদ খান, কোর্ট ইন্সপেক্টর গোলাম রব্বানী, এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক লুৎফর রহমান লাবু, ডাঃ আবুল হোসেন কলেজের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম, সাংবাদিক খন্দকার রবিউল ইসলাম ও মাদকসক্তি থেকে মুক্ত হওয়া হিরা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুন্নাহার চৌধুরী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমীন করিমী, জেলা তথ্য অফিসার তাহমিনা আক্তার, জেল সুপার আনোয়ারুল করিম, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আলীমুর রেজা, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মকর্তা-মাদকমুক্ত হওয়া ব্যক্তি, এনজিও প্রতিনিধিগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, মাদকের ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী ১৯৮৮ সাল থেকে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এই দিবসের মাধ্যমে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করায় মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকেই কোন প্রকার ছাড় দেওয়ার অবকাশ নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী এখন থেকে সরকারী চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেককেই ডোপ টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। এর ফলে কারো শরীরের মাদক থাকলে কারো পক্ষে সরকারী চাকুরীতে প্রবেশ করার সুযোগ নেই, যা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। অনেকে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করেন। এ ক্ষেত্রে সকলের জানা থাকা প্রয়োজন, সরকার কোন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পূর্বে এটি দ্বারা সাধারণ মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে সে বিষয়টি চিন্তা করে পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। আমাদের দেশের জনসংখ্যার শতকরা ৬০% তরুণ প্রজন্মের, যারা ভবিষ্যতে আমাদের দেশের নেতৃত্ব দিবে। এই তরুণ প্রজন্মকে মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে রক্ষা করতে এখনই আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আবার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্নের সোনার বাংলার কথা চিন্তা করি সেটি বাস্তবায়ন করতে গেলে সেই সময় যারা নেতৃত্ব দিবে আমাদের সেই তরুণ প্রজন্মকে মাদকের ভয়াল গ্রাসের হাত থেকে এখনই রক্ষা করতে হবে। তবেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর ভিশন অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে পারবো বলে উল্লেখ করেন।
এছাড়াও অন্যান্য বক্তাগণ মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, অবৈধ পাচার, সরকার প্রণীত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগসহ মাদকের ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনা সভার শেষে দিবসটি উপলক্ষে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।