Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ী কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ ময়দানের ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ পৌরসভা॥বৃষ্টিতে ভিজে ঈদুল ফিতরের নামায আদায়

॥রবিউল ইসলাম মজনু॥ বৃষ্টির কারণে গতকাল ৫ই জানুয়ারী সকাল ৮টা ৫মিনিটে নির্ধারিত সময়ের ২৫মিনিট আগেই রাজবাড়ী শহরের রেলওয়ে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, পদস্থ সরকারী কর্মকর্তাগণ, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মহিলাদের ঈদের নামাজ আদায়ের পৃথক ব্যবস্থা ছিল। প্রধান ঈদের জামাতে ইমামতি এবং মোনাজাত পরিচালনা করেন ভান্ডারিয়া সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক ও রাজবাড়ী জজ কোর্ট জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ মোস্তফা সিরাজুল কবির।
সকাল সাড়ে ৮টায় এই প্রধান ঈদের নামাজ শুরু হওয়ার সময় নির্ধারিত থাকলেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে ৮টা ৫মিনিটে সময় নামাজ শুরু হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে আরম্ভ হয় মুষলধারে তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়।
বৃষ্টির আগাম বার্তা থাকা স্বত্ত্বেও রাজবাড়ী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ প্যান্ডেলে বৃষ্টির পানি রোধে তাবু বা ত্রিপল দিয়ে বৃষ্টির পানিরোধের জন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ইতিপূর্বে প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা বৃষ্টির জন্য ঈদের প্রধান জামাত বিকল্প স্থানে অনুষ্ঠানের প্রস্ততি থাকলেও এবার সে ব্যবস্থাও করা হয়নি। ফলে প্রধান জামাতে অংশগ্রহণকারীরা বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ আদায়ে বাধ্য হন। আবার নির্ধারিত সময়ের পঁচিশ মিনিট আগে জামাত শুরু হওয়ায় বৃষ্টির কারণে বহু মানুষ প্রধান ঈদের জামাতে শরীক হতে পারেননি।
শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির রাত ১১টা ১৫মিনিটে নতুন সিদ্ধান্তের পর রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজবাড়ী শহরে তথ্য অফিসের মাইকে শুধুমাত্র বাজার এলাকায় প্রধান ঈদের জামাতের সময়সূচী কিছু সময়ের জন্য প্রচার করা হয়। শহরের অধিকাংশ এলাকায় তথ্য অফিস বা পৌরসভার ঈদের প্রধান জামাতের মাইকিং করা হয়নি। ফলে রাজবাড়ী শহরের অধিকাংশ মুসুল্লী ঈদের প্রধান জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
রাজবাড়ী শহরের লক্ষ্মীকোল এলাকা থেকে প্রধান ঈদের জামাতে আসা মিজানুর রহমান মুরাদ বলেন, ঈদ হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও ছিল জটিলতা। যাই হোক রাত ১১টার পরে জানতে পারলাম বুধবারই ঈদ হবে। সকাল সাড়ে ৮টায় রেলওয়ে ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জেনেছিলাম। অথচ আমরা কয়েকজন সকাল ৮টা ৫মিনিটের সময় এসে দেখি নামাজ শুরু হয়ে গেছে। তারপর শুরু হলো বৃষ্টি। কোথাও দাঁড়ানোর জায়গাও নেই। কি আর করা, বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ না পাওয়ার দুঃখ নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। নিজ গ্রামের মসজিদেই নামাজ আদায় করবো।
সজ্জনকান্দা মন্ডলপাড়ার বাসিন্দা কানু মন্ডল বলেন, আমার বাড়ী থেকে রেলের মাঠের কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ ময়দান কাছেই। নির্ধারিত সময়ে বৃষ্টির মধ্যেই এসে দেখি নামাজ প্রায় শেষ। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনার কথা অনেক আগে থেকে জানা গেলেও রাজবাড়ী পৌরসভা কেন ব্যবস্থা নিলো না তা বোধগম্য নয়। পৌরসভার দায়িত্বহীনতার কারণে কয়েক হাজার মুসল্লীকে ভোগান্তি পোহাতে হলো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ঈদুল ফিতরের আগের রাতে ঝড়ের কারণে রাজবাড়ী পৌরসভা কর্তৃক নির্মিত ঈদগাঁহ এর দুর্বল বাঁশের তৈরি প্যান্ডেল ভেঙ্গে পরায় সকালে রেলওয়ে মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। গত বছরের প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ঈদের জামাত না হওয়ায় এবারও সেই বিষয়কে প্রধান্য দেয়নি রাজবাড়ী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। যার ফলে পূর্বের ন্যায় এবারও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ঈদের প্রধান জামাতে বিঘœ ঘটায় কয়েক হাজার মুসল্লী নামায আদায় করতে পারেননি।
প্রধান জামাতের পাশাপাশি রাজবাড়ী আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া খানকা শরীফ মসজিদ(বড় মসজিদ), পুলিশ লাইনস জামে মসজিদ, রাজবাড়ী জজ কোর্ট জামে মসজিদ, সদর উপজেলা জামে মসজিদ, দক্ষিণ ভবাণীপুর জামে মসজিদ, রাজবাড়ী বাজারের দুধ বাজার জামে মসজিদ, শ্রীপুর বাস টার্মিনাল মসজিদ এবং রেলওয়ে আজাদী ময়দানে জাকের পার্টির ঈদের জামাতসহ জেলার সকল এলাকার ঈদগাঁহ ময়দান ও মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।