॥রবিউল ইসলাম মজনু॥ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে ঈদযাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বাস ও মাহেন্দ্রগুলো। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত স্বাভাবিক সময়ের বাস ভাড়া ৪০ টাকা। ঈদ উপলক্ষে বাস মালিকরা ২৫টাকা বাড়িয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছে ৬৫টাকা। কিন্তু বাস্তবে নেয়া হচ্ছে আরও বেশী।
একইভাবে পাংশা, কুষ্টিয়া পর্যন্ত স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাস সমিতির নির্ধারিত বাড়তি ভাড়ার চেয়েও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
অপরদিকে স্বাভাবিক সময়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত মাহেন্দ্রর ভাড়াও ৪০টাকা। ঈদ উপলক্ষে আরও ৩০ টাকা বাড়িয়ে মাহেন্দ্র মালিকরাই ভাড়া নির্ধারণ করেছে ৭০টাকা। কিন্তু ভাড়া আদায় করা হচ্ছে দেড়শ টাকা পর্যন্ত।
লঞ্চে নদী পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে মাহেন্দ্রযোগে রাজবাড়ী শহরের শ্রীপুরের পলাশ ফিলিং স্টেশনের সামনে এসে নামা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকায় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরী করি। কোন ঈদেই দৌলতদিয়া ঘাটের ভোগান্তি পোহানো ছাড়া আসতে পারি না। বিগত কয়েক বছর ঈদের সময় দৌলতদিয়া ঘাটে যানজটের যে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে এবার তা ছিল না ঠিকই তবে মাহেন্দ্রতে ভাড়া নিয়েছে ১৫০ টাকা, যা স্বাভাবিক সময়ে ৩গুণেরও বেশী।’ আলমগীর হোসেনের মতো আরো কয়েকজন মাহেন্দ্র ও বাসযাত্রীও একইভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেন।
লোকাল বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হাসান বলেন, ঈদ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সাথে আলোচনা করে প্রতি বছরের মত এবারও দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ীর ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের ৪০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বৃদ্ধি করে ৬৫ টাকা, পাংশা পর্যন্ত স্বাভাবিক সময়ের ১০০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ১৫০ টাকা এবং কুষ্টিয়া পর্যন্ত স্বাভাবিক সময়ের ১৫০ টাকা থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করা হয়েছে। কোন পরিবহন যদি এর থেকে বেশী ভাড়া নেয় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মাহেন্দ্রতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে রাজবাড়ী জেলা ডিজেল চালিত অটোরিক্সা ও অটোটেম্পু মালিক সমিতির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ জুয়েল দাবী করেন, ‘ঈদ উপলক্ষে দৌলতদিয়া থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত ৮০ টাকা ও পাংশা পর্যন্ত ১২০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হচ্ছে।’ কয়েকজন মাহেন্দ্র চালকের অভিযোগ, মাহেন্দ্র মালিক সমিতির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ জুয়েল পুলিশের কথা বলে ‘ঈদ মোবারক’ এর স্টিকার প্রতিটি মাহেন্দ্র থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছে।
দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট আবুল হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার ব্যাপারে আমাদের কাছে এ পর্যন্ত কোন যাত্রী অভিযোগ করে নাই। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিব।