॥চঞ্চল সরদার॥ রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না জলাতঙ্ক রোগের টিকা। গত ১০ই এপ্রিল থেকে ভ্যাকসিন সাপ্লাই নাই বলে হাসপাতালের জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বিপাকে পড়েছে দরিদ্র মানুষ।
রোগীদের সাথে কথা বলে জনা যায়, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানী জলাতঙ্কের টিকা বাজারজাত করলেও এর দাম বেশী। কাউকে কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানর, বাদুর এই সকল প্রাণী কামড় দিলে ভ্যাকসিনের ৪ ডোজ নিতে হয়। সরকারী হাসপাতালগুলোতে এই টিকা বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে সরবারহ না থাকার কারণে এই সেবা পাচ্ছে না মানুষ। ফলে সাধারণ মানুষকে টাকা দিয়ে কিনে টিকা নিতে হচ্ছে।
গতকাল ১৭ই মে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের সামনে টিকার জন্য অপেক্ষা করছে বেশ কিছু রোগী। উপরে টাঙানো নোটিশ দেখে তারা হতাশ হয়ে কর্তৃপক্ষকে নানা ধরণের কথা বলছে।
রাজবাড়ী শহরের ধুঞ্চি এলাকার কলেজ ছাত্র মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাকে কুকুরে কামড়ালে আমি সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে আসি। কিন্তু এখানে এসে ভ্যাকসিন পাইনি। পরে ভ্যাকসিন কিনে আমার যে ৪ ডোজ সেটা শেষ করি। সরকারী হাসপাতালে ওষুধ থাকবে না কেন? যে ওষুধগুলো হাসপাতালে ফ্রি দেওয়ার কথা সেটা কেন আমাদেরকে বাইরের দোকান থেকে কিনতে হবে?
সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের বানীবহ গ্রাম থেকে আসা মালেকা বেগম বলেন, আমার ৪টা ডোজ নেয়া হয়েছে। যেহেতু হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই তাই আমরা চার জনে একটা ভ্যাকসিন কিনি। একেক জনের ১২০ টাকা করে খরচ হয়। পরে নার্সদের মাধ্যমে আমরা ভ্যাকসিন নেই। আমাদের এখানে অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, কারণ আমরা চার জন একত্র না হলে ওষুধ কেনা হয় না। আমরা চাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রত এর সমাধান করুক।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ দীপক কুমার বিশ^াস বলেন, কুকুর-বিড়াল যাদেরকে কামড় দেয় তারা এই ভ্যাকসিন নিতে আসে। আমরা সবাইকে ওষুধ দেই, কাউকে ফেরত দেওয়া হয় না। এ কারণে এটা কোনভাবেই একটানা সাপ্লাই দেয়া সম্ভব না। আবার ভ্যাকসিন আনতে যাবে, আনলেই পাওয়া যাবে। হাসপাতালে এক মাসে যে ওষুধ আসে সেটা ১০ থেকে ১৫দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আনলিমিটেডভাবে সরকারও দিতে পারে না। তারপরও আমরা ভালো সিস্টেম করেছি। চার ভাগের এক ভাগ করে দিচ্ছে। চার জন মিলে ১টা ভ্যাকসিন কিনে নিয়ে আসলে আমরা চার জনকে দিয়ে দেই। একজনের ফুল কোর্সের জন্য ২হাজার টাকার মতো লাগে। সেখানে ৫শত টাকায় হয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই সুযোগটা করে দিয়েছি।