Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

রাজবাড়ীতে কারারক্ষীর বিরুদ্ধে হাজতীর স্ত্রীকে ধর্ষণের মামলার তদন্ত পিবিআই’র উপর ন্যাস্ত

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলা কারাগারের কারারক্ষী মোঃ আনিসুর রহমান ওরফে আজ্জুল(৩৫) এর বিরুদ্ধে হাজতীর স্ত্রী ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৯(৪)(খ)/৯(১)/১০/৩০ ধারায় দায়েরকৃত মিস.পিটিশন নং-১০০/২০১৯ মামলাটি তদন্ত করবে পিবিআই।
গত ১৩ই মে এ মামলার আদেশের জন্য ধার্য্য তারিখে রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শারমিন নিগার এ আদেশ প্রদান করেন।
এরআগে গত ২৯শে এপ্রিল রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধু(২৬) আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত ১৩ই মে মামলাটির আদেশের জন্য তারিখ ধার্য্য করেন। গত ১৩ই মে বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে উক্ত আদেশ প্রদান করেন। মিস.পিটিশন নং-১০০/২০১৯, তাং-১৩/৫/২০১৯ইং।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, রাজবাড়ী জেলা কারাগারে আটক থাকা স্বামীর জামিনের প্রলোভন দেখিয়ে ওই গৃহবধুকে ধর্ষণ করে কারারক্ষী আনিসুর।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ওই গৃহবধুর স্বামী রাজবাড়ী জুট মিলে কাজ করতেন। সম্প্রতি একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে তার স্বামী রাজবাড়ী জেলা কারাগারে রয়েছেন। গত ১লা ফেব্রুয়ারী বিকেল ৩টার দিকে তিনি তার স্বামীকে দেখতে রাজবাড়ী জেলা কারাগারে যান। এ সময় সেখান দায়িত্বে থাকা কারারক্ষী আনিসুর রহমান আজ্জুল(৩৫) এর সাথে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে আনিসুর তাকে ৭দিনের মধ্যে তার স্বামীকে জামিন করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এজন্য তাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে জানান আনিসুর। এতে সরল বিশ^াসে রাজী হন তিনি। এরপর কারারক্ষী আনিসুর তাকে উকিলের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে একটি মাহেন্দ্র গাড়ীতে উঠিয়ে তার পরিচিত এক বাড়ীতে নিয়ে যায়। মাহেন্দ্র গাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার সময় আনিসুরের সাথে তার ২/৩জন সহযোগি ছিলো। ওই বাড়ীতে নেয়ার পর আনিসুর তাকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং তার সহযোগিরা ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। এ ঘটনায় মামলা করলে ধর্ষণের দৃশ্য সাংবাদিকের মাধ্যমে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় আনিসুর।
পরবর্তীতে গত ২৪শে এপ্রিল রাতে ওই গৃহবধু তার স্বামীর সাথে দেখা করতে গেলে কারারক্ষী আনিসুর ও তার সহযোগিরা তাকে জোর পূর্বক জেলা কারাগার সংলগ্ন শ্মশান ঘাটের ভিতরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ আনোয়ারুল করিম জানান, কারারক্ষী মোঃ আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে শুনেছি। তিনি আরো বলেন, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে আদেশ প্রদান করেছেন।
এদিকে আদালতে মামলা দায়েরের পর থেকে কারারক্ষী আনিসুরের পক্ষ নিয়ে একটি চক্র মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মামলাটি গোপন আপোষ মিমাংশার জন্য দেন দরবার সম্পন্ন করে বলে জানা যায়। কিন্তু আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে আপোষরফা থমকে যায় বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯শে এপ্রিল রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধুর মামলা পর ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে।