Site icon দৈনিক মাতৃকণ্ঠ

১২তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে রাজবাড়ীতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ ১২তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে “প্রযুক্তির ব্যবহার, অটিজম বৈশিষ্টসম্পন্ন ব্যক্তির অধিকার”-প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে গতকাল ২রা এপ্রিল সকালে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আম্রকানন চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এরপর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান ও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ মোঃ আব্দুল হান্নান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস।
প্রজেক্টরের মাধ্যমে অটিজম সম্পর্কিত পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন অটিজম চিকিৎসা কেন্দ্রের কনসালটেন্ট ডাঃ নাসির উদ্দিন। এ সময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি ও অটিজম আক্রান্ত শিশুগণসহ বিশেষায়িত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রত্যয় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশে কম-বেশী অটিজম আক্রান্ত শিশু রয়েছে। দীর্ঘদিন পর হলেও জাতিসংঘ ২রা এপ্রিলকে বিশ্ব অটিজম দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এরপর থেকে বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত সকল দেশে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। যার কারণে তিনি নিজেই আজকে বিশ্ব অটিজম দিবসের জাতীয় প্রোগ্রাম উদ্বোধন করেছেন। তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অনেক আগে থেকেই অটিজম শিশুদের নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছে। এই কাজের অংশ হিসেবে ২০১০ সালে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রও সরকার প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার করেছিলেন। আমার নিজের একটি অটিজম সন্তান থাকার সুবাদে আমার সেখানে থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। এই অটিজম শিশুদের নিয়ে কাজ করার জন্য তিনি আন্তর্জাতিকভাবে পুরষ্কৃত হয়েছেন। উন্নত বিশ্বের সকল দেশেই অটিজম শিশুদের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ সকল প্রকার ব্যয়ভার সরকার বহন করে। এমনকি যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশে অটিজম সেন্টারে প্রতিটি অটিজম শিশুর জন্য একজন করে দক্ষ ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করে। শুধু তাই নয়-সেই সেন্টার থেকে অটিজম শিশুদের সব ধরনের সুবিধা প্রদান করা হয়। যেহেতু বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে উন্নত দেশে পরিণত হবে সেই লক্ষ্যে দেশের অটিজম শিশুদের যাতে উন্নত বিশ্বের মতো সব ধরনের সুবিধা প্রদান করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রত্যেক জেলায় অটিজম শিশুদের জন্য ১টি করে বিশেষায়িত স্কুল প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমি জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই বার প্রধানমন্ত্রীর সাথে ডিসিদের সম্মেলনে অটিজম শিশুদের জন্য ২টি প্রস্তাব দিয়েছি। যার একটি বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। অপর প্রস্তাবটিও সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে, যা ভবিষ্যতে বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করা যায়।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সকলকে এই অটিজম আক্রান্তদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। রাজবাড়ীর বিশেষায়িত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রত্যয় স্কুলকে আরো সম্প্রসারণ করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন। আলোচনা সভার শেষে উপস্থিত সকল অটিজম শিশুর মধ্যে চকলেট, চিপস, নাস্তাসহ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।